Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
হরিদাস দাঁ রোড

এখানে এখনও সকলে মিলেমিশে থাকে

পাড়া মানে আমার কাছে কিছু অনুভূতি আর অভিজ্ঞতা। যার সঙ্গে মিশে আছে কিছু মুখ আর বাড়িঘর। ১৯৫১ সাল থেকে এ পাড়ায় আমার বসবাস। তবে শুধু হরিদাস দাঁ রোড নয়, পাড়ার চৌহদ্দির মধ্যে রয়েছে শ্যামাচরণ স্মৃতিতীর্থ রোড এবং রামস্বরূপ ক্ষেত্রী রোড।

বিভোর: ফুটবলে মেতেছে খুদেরা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বিভোর: ফুটবলে মেতেছে খুদেরা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

সমর রায়চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০০:৫৫
Share: Save:

পাড়া মানে আমার কাছে কিছু অনুভূতি আর অভিজ্ঞতা। যার সঙ্গে মিশে আছে কিছু মুখ আর বাড়িঘর। ১৯৫১ সাল থেকে এ পাড়ায় আমার বসবাস। তবে শুধু হরিদাস দাঁ রোড নয়, পাড়ার চৌহদ্দির মধ্যে রয়েছে শ্যামাচরণ স্মৃতিতীর্থ রোড এবং রামস্বরূপ ক্ষেত্রী রোড।

এখানে এখনও সকাল সকাল কানে আসে ফেরিওয়ালার ডাক। শিলকাটাই, ধুনুরির টঙ্কার কিংবা চাবিওয়ালার ছনছনানি মিশে যায় পাড়ার আনাচ-কানাচে। আজকের পাড়ায় রয়েছে এক মিশ্র সংস্কৃতি। তবে সকলেই মিলেমিশে থাকেন। আগে এ পাড়ায় সব ক’টি ছিল বাড়ি। দেখতে দেখতে গড়ে উঠছে বহুতল। সময়ের সঙ্গে এসেছে নানা উন্নয়ন। এলাকার মানুষের উদ্যোগে পাড়াটা এখন পরিচ্ছন্ন থাকছে। বসেছে জোরালো আলো। আগে বৃষ্টিতে জল জমলেও আগের তুলনায় কমেছে সেই সমস্যা।

আগের চেয়ে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। প্রয়োজনে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত বাস এবং অটো। এখানে বেশির ভাগ গাড়ি রাস্তায় পার্ক করা হয়। এক-এক সময়ে নিজের বাড়ির সামনে থাকে অন্যের গাড়ি। তাই মাঝেমধ্যে ঢুকতে-বেরোতে সমস্যা হয়।

পাড়ার পুজোটাকে কেন্দ্র করে মানুষের উদ্দীপনার অভাব নেই। বাঙালি হোক বা অবাঙালি, মিলেমিশে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া কিংবা এক সঙ্গে ভোগ খাওয়ার রীতিটা আজও রয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে হয় কিছু কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আগে নিয়মিত রবীন্দ্রজয়ন্তী হলেও গত কয়েক বছর সংগঠকের অভাবে তা আর হয়ে উঠছে না।

আক্ষেপ একটাই আমাদের পাড়ার নেই কোনও চায়ের দোকান। তাই শুকনো গলায় আড্ডা দিতে হয়। তবু হারিয়ে যায়নি এ পাড়ার আড্ডাটা। তবে আড্ডা দেন মূলত পঞ্চাশোর্ধরা।

কয়েক বছর আগেও বাড়ির সামনে ওই মাঠে দেখতাম খেলার পরিচিত দৃশ্য। এখন মাঠটা বেশির ভাগ সময়ে ফাঁকাই পড়ে থাকে। বছরে এক-আধ বার ক্রিকেট ও ফুটবল প্রতিযোগিতা ধরে রেখেছে খেলাধুলোর ক্ষীণ ঐতিহ্যটা।

পাড়ার ক্লাবের সদস্যেরা সব কিছুতেই পাশে থাকেন। তবে তাঁরাও সকলে প্রবীণ হয়েছেন। যুব সম্প্রদায় পাড়ার কোনও ব্যাপারে মাথা ঘামাতে চায় না। তাঁরা অনেকটাই নির্লিপ্ত থাকতে পছন্দ করেন। মনে পড়ছে পাড়ার শ্যামল মিত্র, বলরাম সাহা, নির্মল সাহা, অজিত রায়চৌধুরীর মতো কিছু মানুষের কথা যাঁরা পাড়ার যে কোনও ব্যাপারে এগিয়ে এসে নিঃস্বার্থে দাঁড়াতেন।

লেখক আইনজীবী

অন্য বিষয়গুলি:

Experience My Colony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE