ভাসছে দমদম রোড। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
‘রাস্তায় জল থইথই। আর তা হয়েছে খালের জল থেকে।’ বুধবার দিনভর দমদম রোডে যাতায়াত করতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন পথচারী থেকে নিত্যযাত্রীরা।
রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টি কিছুটা থামলেও বুধবারও জল সরেনি দমদম রোড থেকে। বাগজোলা খাল উপচে পড়ায় ভেসে গিয়েছে হনুমান মন্দির থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এলাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাস্তার বেহাল দশা। ছোট-বড় খানাখন্দ তো বটেই, কোথাও কোথাও পিচ উঠে গিয়ে রাস্তার ইট পর্যন্ত বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু জমা জলের কারণে তা বোঝার উপায় নেই। গর্ত এড়াতে গাড়িচালকেরা তাই রাস্তার মাঝখান দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় যানজটও বাড়ছে। এক অটোচালকের কথায়, ‘‘ওই খারাপ রাস্তায় চালাতে গিয়ে এমনিতেই গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। তার উপরে জল। গাড়ি চালানোই এখন মুশকিল।’’
হনুমান মন্দির সংলগ্ন বাগজোলা খালের উপরের কালভার্টে সম্প্রতি গর্ত দেখা দেওয়ায় আগে থেকেই একটি লেন বন্ধ। দমদম রোডের একাংশ দিয়ে ভারী যান চলাচল এই মুহূর্তে বন্ধ রয়েছে। ছোট গাড়ি চলাচল করছে একটিমাত্র লেন দিয়ে। ফলে সব মিলিয়ে নাগেরবাজার পর্যন্ত তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে দমদম রোডে, যার রেশ এসে পড়ছে যশোর রোডেও। যান নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ট্র্যাফিক কর্মীদের। এ দিন লেক টাউন থেকে নাগেরবাজার পর্যন্ত অংশে তীব্র যানজটে হাঁসফাঁস করতে থাকেন যাত্রীরা।
এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বাগজোলা খালের যে অংশ দিয়ে জল রাস্তায় আসছে, সেখানে বালির বাঁধ দেওয়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয়েরা। দমদম রোড ধরেই প্রতিদিন অফিসে যান স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ ঘোষ। তিনি বলছেন, ‘‘নাগেরবাজার মোড় থেকে দমদম স্টেশন পর্যন্ত যেতে ট্যাক্সি ১৫০ টাকা চাইছে। অটো দমদম স্টেশন পর্যন্ত যেতেই চাইছে না। তাই হাঁটুজল ঠেলেই হাঁটতে হাঁটতে স্টেশন পর্যন্ত গিয়েছি। এই নরক যন্ত্রণা আর কত দিন?’’ স্থানীয় বাসিন্দা অণিমা গুপ্ত বলছেন, ‘‘হেঁটে যেতে গিয়ে রাস্তায় কোথায় গর্ত রয়েছে, বুঝতে না পারায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন অনেকে। অন্তত তাপ্পিও কি দেওয়া যায় না?’’ নিত্যযাত্রীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা করলেও আরও পুলিশকর্মী মোতায়েন করার প্রয়োজন রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দমদম রোড, যশোর রোড এবং বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন অংশে ২০-২৫ জন করে কর্মী যান নিয়ন্ত্রণ করেছেন। কর্তব্যরত কর্মীরাও জানাচ্ছেন, খালের জল রাস্তায় চলে আসায় এবং রাস্তার বেহাল দশার কারণে একটি লেন ধরে উভমুখী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বর্ষায় রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। উপরন্তু পরিস্রুত পানীয় জলের প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছিল। দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসক বলেন, ‘‘রাস্তাটি পূর্ত দফতরের অধীনে। পুজোর আগে মেরামতির কাজ শেষ করবে বলে জানিয়েছিল পূর্ত দফতর। প্রয়োজনে ওদের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের তরফে আবার কথা বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy