জোর-যার: রাস্তা জুড়ে বাতিল জিনিসের ঠাঁই। ছবি: নিজস্ব চিত্র
ফোল্ডিং খাট, বাতিল কাঠের স্তূপ, ডাঁই করে রাখা বাসন, একাধিক মাটির উনুন, নোংরা কাপড়-তোষক-বালিশ, প্লাস্টিকের বড় বড় ড্রাম যত্রতত্র রাখা আছে। সদরের গা ঘেঁষা পান-গুটখার দোকান। জমে থাকা নোংরা জলের উপরেই গাড়ি, ভ্যান দাঁড় করানো। ঢোকার পথে পা ছড়িয়ে চলছে মহিলাদের আড্ডা। এর মধ্যে দিয়ে কোনও মতে ঢুকতে হয় কলকাতা পুরসভার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে ইন্ডিয়ান এক্সচেঞ্জ প্লেস (এক্সটেনশন) রাস্তায় কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি) প্রধান কার্যালয়ে।
শুধু কেআইটি-র সদর দফতরই নয়, এই রাস্তায় রয়েছে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি অফিস। কেআইটি-র এই মূল বাড়িটির পাশেই রয়েছে বিংশ শতকের গোড়ায় তৈরি চিনাদের মন্দির। আবর্জনার চাপে ঢাকা পড়ে গিয়েছে সেটিও। আশপাশে রয়েছে টেরিটি বাজার, টোডি ম্যানসন, পোদ্দার কোর্ট, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ-সহ নানা ব্যাঙ্ক ও অফিস। রাস্তার এক দিক নিউ সিআইটি রোড নামে সোজা চলে গিয়েছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের দিকে। অন্য দিক, রবীন্দ্র সরণীর দিকে।
অভিযোগ, এই অঞ্চল জুড়ে দীর্ঘ দিন ধরে চরম অব্যবস্থা রয়েছে। রাস্তাতেই পড়ে থাকে আবর্জনা। তা ঘিরে কাক-কুকুরের ভিড়। তীব্র দুর্গন্ধ। কাজের সূত্রে প্রতি দিন অসংখ্য মানুষ আসেন এই এলাকায়। বাস-গাড়ি-লরির ভিড় তোয়াক্কা না করেই নাকে রুমাল চেপে পথচারীরা প্রায় রাস্তার মাঝখান দিয়েই হাঁটতে বাধ্য হন।
কেন এই পরিস্থিতি? ওই এলাকাতেই একটি বেসরকারি সংস্থার কর্তা সায়ক সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সকালে তো আরও খারাপ অবস্থা হয়। রাস্তার উপরেই আনাজ এবং মুরগির বাজার বসে যায়। পা ফেলা যায় না। এই নিয়ে পুরসভার কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম অনেক দিন আগে। কিছুই হয় না।’’ টোডি ম্যানসনের কর্মী সোনালি চন্দ্রের কটাক্ষ, ‘‘কেআইটি-র মতো উন্নয়নমূলক সরকারি সংস্থাই যদি নিজেদের অংশ পরিচ্ছন্ন রাখতে না পারে। তবে অন্য সংস্থা কী করবে?’’
কেআইটি-র এক আধিকারিক ইঞ্জিনিয়রের কথায়, ‘‘আমরা এই নিয়ে খুবই নাজেহাল। স্থানীয় কাউন্সিলরকেও চিঠি লেখা হয়েছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। কোনও সরকারি সংস্থার সদর দফতরের এই হাল হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক।’’
৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেহানা খাতুন বলেন, ‘‘গোটা রাস্তাটাই খুব নোংরা হয়ে থাকে। যদিও কর্মীরা সাফাই করেন। যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলে রাখা বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই ওখানে একটা কম্প্যাক্টর বসানোর কাজ চলছে। কোথাও কোনও পাইপ ফেটে জল বেরোচ্ছে কি না দেখব। বৌবাজার থানাকে জানিয়ে রাস্তায় থাকা লোকজনকে সরাতে অভিযান করা হবে দ্রুত।
সমস্যার কথা মানছেন পুরসভার পাঁচ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অপরাজিতা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘বহু বছরের পুরনো এই সমস্যা। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে না। তবু কলকাতা পুরসভা, পুলিশ এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একত্রে এর সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy