Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জল কিনতে লাগছে ছেঁকা

কলকাতার পুরসভার আটটি ওয়ার্ডে ওই দিন বিকেল থেকে প্রায় সাড়ে চারশো জন পেটের সমস্যা নিয়ে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছেন। আতঙ্কে ভুগছেন ওই সব ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

পেটের সমস্যা ছড়ানোয় ভরসা বোতলবন্দি জলই। নিজস্ব চিত্র

পেটের সমস্যা ছড়ানোয় ভরসা বোতলবন্দি জলই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:২৮
Share: Save:

জলের দরে আগুন!

কেউ সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে লাভ করছেন কয়েক গুণ, কেউ আবার দামি ব্র্যান্ড ছাড়া বিক্রিই করছেন না। ফলে খাওয়ার জলের দাম নিয়ে শনিবার থেকে নাজেহাল দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দারা।

কলকাতার পুরসভার আটটি ওয়ার্ডে ওই দিন বিকেল থেকে প্রায় সাড়ে চারশো জন পেটের সমস্যা নিয়ে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছেন। আতঙ্কে ভুগছেন ওই সব ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

জলের সমস্যার থেকেই পেটের সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে আশঙ্কা অধিকাংশের। পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলে তাই ভরসা করছেন না তাঁরা। বাঘা যতীন, চিত্তরঞ্জন কলোনি, কামারপাড়া, রবীন্দ্রপল্লি, বৃজি, পাটুলি এলাকাতেই পেটের সমস্যা ব্যাপক হারে ছ়ড়িয়েছে। যার জেরে ওই সব এলাকায় জলের চাহিদার সঙ্গে বেড়েছে দামও।

বাঘা যতীনের বাসিন্দা দোলা রায় ও তাঁর আশি বছরের মা মিনতি দাস দু’জনেই পেটের সমস্যায় ভুগছেন। তাঁদের ভরসা এখন দোকান থেকে কেনা বোতলবন্দি জল। রবিবার মাকে নিয়ে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান দোলাদেবী। তিনি জানান, কু়ড়ি লিটারের জলের জার বাড়ি পৌঁছে দিলে শুক্রবার পর্যন্ত একশো টাকা নিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ১৪০ টাকা। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে দু’জনেই অসুস্থ। ফলে বাধ্য হয়ে এই দামেই কিনতে হচ্ছে। কেনা জল না খেলে যদি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ি!’’

চিত্তরঞ্জন কলোনির বাসিন্দা সুভাষ সাহা জানান, পেটের অসুখের দাপটের খবর পেয়েই বাদ দিয়েছেন পুরসভার জল। বিপদ এড়াতে বেছে নিয়েছেন বোতলবন্দি পানীয় জল। কিন্তু ফি দিন তিনশো টাকার জল কেনাও সমস্যার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘দোকানে দেড়শো টাকার কমে জল নেই। বলছে দামি কোম্পানির জল ছাড়া আসছে না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক জল ব্যবসায়ীর পাল্টা যুক্তি, ‘‘দোকানের জল খেয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দায় পড়বে আমার উপরে। তাই কম দামি জল রাখছি না।’’

ওই অঞ্চলের আর এক জল ব্যবসায়ী জানান, শনিবার বিকেল থেকেই বোতলবন্দি জলের চাহিদা প্রচণ্ড বেড়ে গিয়েছে। এত জোগান নেই। তার উপরে অধিকাংশ ক্রেতারই বাড়িতে জল পৌঁছে দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা না দিলে কেউ জল পৌঁছে দিতে রাজিই হচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ফলে বেশি টাকা না চেয়ে উপায় নেই।’’

বাঘা যতীনের এক জল ব্যবসায়ী পার্থ মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও অতিরিক্ত টাকা না নিয়েই সকলের বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও অনেকেই বিপদ বুঝে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

packaged drinking water drinking water Diarrhea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE