নোনাপুকুরের কাছে একটি হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এক তরুণীর মৃতদেহ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই তরুণীর নাম নথিভুক্ত না করেই হোটেলে তাঁকে নিয়ে উঠেছিলেন তাঁর সঙ্গী। এমনকী, সঙ্গী ওই যুবকের পরিচয়ও ঠিক ভাবে নথিভুক্ত করেননি হোটেল কর্তৃপক্ষ।
রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের একটি হোটেলের ঘরে দুই সন্তান-সহএক মহিলাকে খুন করে পালায় তাঁর সঙ্গী। অভিযুক্তের ভুয়ো পরিচয়পত্রের কারণে তার খোঁজ পেতে নাজেহাল হয়েছিলেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন হোটেল এবং গেস্ট হাউসে পরিচয়পত্র নথিভুক্ত না করেই আবাসিকদের ঘড় ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বারে বারে। উপরের দু’টি ঘটনা তার নমুনা মাত্র। এই পদ্ধতি বন্ধ করতে সম্প্রতি নতুন একটি প্রক্রিয়া চালু করেছে লালবাজার। তাদের দাবি, এখন থেকে কোনও হোটেল এবং গেস্ট হাউসে কারা আবাসিক হিসেবে ঘর ভাড়া নিচ্ছেন, তা সহজেই জানতে পারছেন থানার আধিকারিকেরা।
কী ভাবে? পুলিশ জানাচ্ছে, হোটেল বা গেস্ট হাউসে নতুন আবাসিক এলে কর্তৃপক্ষ তাঁদের সব তথ্য একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে নথিভুক্ত করছেন। হোটেলের রেকর্ডে থাকার পাশাপাশি সেই তথ্য সঙ্গে সঙ্গে চলে আসছে পুলিশের কাছেও। থানায় বসেই অফিসারেরা নিজেদের মোবাইলে লগ-ইন করে সেই তথ্য দেখতে পাচ্ছেন। ফলে আবাসিকদের বিস্তারিত তথ্যের প্রয়োজন হলে অফিসারদের আর হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে হচ্ছে না।
লালবাজার জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে ধাপে ধাপে শহরের সব হোটেল এবং গেস্ট হাউসে ওই সফটওয়্যার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অধিকাংশ জায়গার কর্তৃপক্ষই তা মেনে নিয়েছেন। এতে কারচুপির সম্ভাবনা থাকলেও লালবাজারের দাবি, ভুয়ো পরিচয়পত্র দিয়ে ঘড় ভাড়া করা কমেছে আবাসিকদের তথ্য নথিভুক্তির জন্য কী করতে হচ্ছে হোটেল এবং গেস্ট হাউসের কর্তৃপক্ষকে?
পুলিশ জানায়, কর্তৃপক্ষ প্রথমে আবাসিকদের তথ্য এবং ছবি দিয়ে ‘অনলাইন গেস্ট ফর্ম’ পূরণ করছেন। ভারতের নাগরিকদের জন্য ভরতে হচ্ছে ‘এ’ ফর্ম, বিদেশি নাগরিকদের জন্য ‘বি’ ফর্ম। নেওয়া হচ্ছে সচিত্র পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি এবং আবাসিকের ছবিও। স্থানীয় থানার অফিসারদের মোবাইলের সঙ্গে যোগ করা রয়েছে এই ‘অনলাইন গেস্ট ফর্ম’। তাঁরা যে কোনও জায়গায় বসেই জেনে নিতে পারছেন সংশ্লিষ্ট আবাসিকের পরিচয়। কারও নথি নিয়ে সন্দেহ হলে খতিয়েও দেখা হচ্ছে।
লালবাজার জানায়, সব হোটেল এবং গেস্ট হাউসের সিসিটিভি-র সঙ্গে নতুন সফ্টওয়্যারের সংযোগ ঘটানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন খোদ পুলিশ কমিশনার। যাতে দরকার হলে অনলাইন ফর্ম পূরণের সময়ের সঙ্গে ওই সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ মিলিয়ে দেখা যায়। পুলিশের দাবি, এই সংযোগ সম্পূর্ণ হলে ‘অনলাইন গেস্ট ফর্ম’-এ কোনও কারচুপি করা যাবে না।
এক পুলিশ অফিসারের কথায়, হোটেল এবং গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ নতুন এই প্রক্রিয়ায় আবাসিকদের তথ্য নথিভুক্ত করতে বাধ্য। তাঁরা তা ঠিক ভাবে করছেন কি না, তা পরীক্ষার জন্য মাঝেমধ্যেই সেখানে হানা দিচ্ছেন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy