মোবাইলটা রাস্তায় খোয়া গিয়েছিল বেহালার অমিত নস্করের। ডুপ্লিকেট সিম কার্ডের জন্য সাধারণ জেনারেল ডায়েরি করতে স্থানীয় থানায় হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হয়েছিল তাঁকে।
মধ্য কলকাতার রাস্তায় নথি হারিয়ে গিয়েছিল কলেজ পড়ুয়া মনীষা আদকের। স্থানীয় থানায় জেনারেল ডায়েরি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। কারণ যে রাস্তার কথা ওই তরুণী বলছিলেন তা দু’টি থানার সীমানাবর্তী এলাকায় পড়ে।
সাদামাটা নথি কিংবা মোবাইল হারিয়ে গেলে থানায় জেনারেল ডায়েরি (জিডি) করাই নিয়ম। কিন্তু আমজনতার অনেকেরই অভিযোগ, তা করতে গিয়ে থানায় যথেষ্ট সময় নষ্ট হয়। কখনও কখনও হেনস্থার মুখে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ। এই অভিযোগ অবশ্য মেনে নিচ্ছেন পুলিশের অনেকেও। তাঁরা বলছেন, এই সমস্যা মেটাতে এ বার ‘ডিজিটাল’ পথে হাঁটতে চাইছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ বার মোবাইল, সিমকার্ড বা কম গুরুত্বপূর্ণ কোনও নথি হারিয়ে যাওয়ার মতো অভিযোগ জানানো যাবে অনলাইনেই। নির্দিষ্ট কোনও থানায় হত্যে দিতে হবে না নাগরিকদের। এ জন্য আগামী কিছুদিনের মধ্যেই প্রাথমিক ভাবে শহরের কয়েকটি থানায় চালু হচ্ছে ডিজিটাল কিয়স্ক। লালবাজারের মতে, ওই ব্যবস্থা চালু হলে খুব সহজেই নাগরিকেরা তাঁদের হারানো বস্তুর তথ্য পুলিশকে জানাতে পারবেন। সেই সঙ্গে খুব দ্রুত অনলাইনেই সমস্ত তথ্য পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দফতরেও।
ডিজিটাল কিয়স্ক কী? লালবাজার জানিয়েছে, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কলকাতা পুলিশের কিয়স্ক রয়েছে। যাতে ২৪ ঘণ্টাই পুলিশকর্মীরা উপস্থিত থাকেন। এ বার থেকে বাছাই করা বেশ কয়েকটি কিয়স্কে রাখা থাকবে ‘ট্যাব’। আর তাতেই অভিযোগ জানানোর জন্য থাকবে নির্দিষ্ট সফটওয়্যার। প্রথমে অভিযোগকারীকে আধার নম্বর দিয়ে এবং আঙুলের ছাপ দিয়ে (বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে) নাম নথিভুক্ত করতে হবে। যদি কারও আধার কার্ড না থাকে, সেক্ষেত্রে তাঁকে মোবাইল ফোনের সাহায্যে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। সফটওয়্যারে পরিচয় যাচাই হওয়ার পরে অনলাইন ফর্মে নির্দিষ্ট কলামে কী হারিয়ে গিয়েছে, তা জানাতে হবে। এর পরে জানাতে হবে হারানো জিনিসের বিস্তারিত তথ্য। সব জানানোর পরে বিষয়টির প্রাপ্তিস্বীকার করে কলকাতা পুলিশ ওই নাগরিকের মোবাইলে একটি এসএমএস পাঠাবে। রেজিস্ট্রেশন নম্বরের পাশাপাশি তাতে থাকবে একটি ‘লিঙ্ক’, যার মাধ্যমে প্রাপ্তিস্বীকারের নথির প্রিন্ট আউট নিতে পারবেন অভিযোগকারী।
পুলিশ বলছে, অভিযোগ নথিভুক্ত হওয়ার পরে তা সোজা চলে যাবে লালবাজারের সার্ভারে। সেখান থেকে যে থানা এলাকার ঘটনা সেখানে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে প্রয়োজন পড়লে পুলিশ ওই অভিযোগ দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারে। প্রয়োজনে ওই অভিযোগ ব্যাঙ্ক বা সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরকেও জানানো হবে। গুরুত্ব বুঝে তদন্তও হতে পারে। লালবাজারের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ব্যাঙ্কের নথি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ নথি হারালে ডিজিট্যাল কিয়স্কে অভিযোগ জানানো যাবে না। কারণ গুরুত্বপূর্ণ নথি হারালে তার তদন্ত হওয়া বাধ্যতামূলক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy