—প্রতীকী ছবি।
মেডিক্যাল কলেজগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া কথা রাখেনি রাজ্য প্রশাসন। শনিবার এমনই দাবি করলেন কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের বক্তব্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর আরজি কর মামলার শুনানিতে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তা বৃদ্ধি নিয়ে একাধিক আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য। তার মধ্যে একটি ছিল পরবর্তী সাত থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সিসি ক্যামেরা লাগানো। কিন্তু তার পর ১২ দিন কেটে গেলেও এই বিষয়ে কাজ প্রায় শুরুই হয়নি বলে দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের।
শুক্রবার রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। রোগীর পরিজনেদের বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পরেই কর্মস্থলে নিরাপত্তা চেয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ওই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। এই আবহে রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিতে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, সাগর দত্তে বর্তমানে ১০০টিরও কম সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছিল, মোট ৩৬০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। কিন্তু তার পর কোনও কাজ এগোয়নি।
বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় দেরি হয়েছে। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, শনিবারই হাসপাতালে ৪০টি সিসি ক্যামেরা পৌঁছেছে। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন, ১৪ দিনের সময়সীমার মধ্যে ৩৬০টি সিসি ক্যামেরা কি চালু করা সম্ভব? সিসি ক্যামেরার কোথা থেকে এবং কী ভাবে পরিচালিত হয়, সেই বিষয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবগত নয় বলে দাবি করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। এই প্রসঙ্গে তাঁরা শুক্রবারের ঘটনাকেই উদাহরণ হিসাবে দেখাচ্ছেন। সিসি ক্যামেরায় অভিযুক্তদের ছবি ধরা পড়লেও কোথা থেকে নজরদার ক্যামেরা পরিচালিত হচ্ছে, কর্তৃপক্ষের সেটা বুঝতেই কয়েক ঘণ্টা লেগে যায় বলে অভিযোগ।
মৃত রোগীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের চার তলায় উঠে চিকিৎসক এবং নার্সদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। হামলার সময় নাকি রেহাই পাননি মহিলা চিকিৎসকেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, আতঙ্কে তাঁদের অনেকেই রেস্টরুম বা বিশ্রামকক্ষে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু রেস্টরুমের সামনে সিসি ক্যামেরা না থাকায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে বিলম্ব হয়। তা ছাড়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক পুলিশের তরফে সিসি ক্যামেরায় নজর রাখা হলে রোগীর উন্মত্ত পরিজনেদের আগেই রোখা যেত বলে মনে করছেন তাঁরা।
সাগর দত্তের আবাসিক চিকিৎসক আকাশ রায় বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে আগের দিনের শুনানিতে বলা হয়েছিল সাত থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। আজ ১২ দিন হতে চলল। হাসপাতালের ৩৬০টি জায়গা সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য চিহ্নিত হল। আজ শুনছি মাত্র ৪০টি ক্যামেরা এসেছে।”
গত ১৭ সেপ্টেম্বর আরজি কর মামলার শুনানিতে ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানতে চেয়েছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই বিষয়ে রিপোর্ট দেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। রাজ্য আদালতে জানায়, রাজ্যের সব হাসপাতালে ডাক্তারদের জন্য শৌচাগার, বিশ্রাম কক্ষ, সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। চিকিৎসকদের ডিউটি রুমে নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও জানানো হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে তাঁদের বৈঠকেও এই বিষয় নিয়ে কথা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy