Advertisement
E-Paper

গাড়ির ধাক্কায় শিক্ষিকার মৃত্যুতে গ্রেফতার চালক

লালবাজার জানায়, সন্তোষের বিরুদ্ধে জেনেশুনে মৃত্যু ঘটানোর ধারা (ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৪ ধারার পার্ট টু) যোগ করা হয়েছে।

শুভলক্ষ্মী বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুভলক্ষ্মী বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২০ ০৩:১১
Share
Save

চার বছর আগে রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের মহড়া চলার সময়ে এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর ছেলে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে এক জওয়ানকে ধাক্কা মেরেছিলেন। শনিবার কালীঘাটে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় স্কুলশিক্ষিকার মৃত্যুর ঘটনায় নাম জড়াল এক ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলেরই। তাকে গ্রেফতারের পরে পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি চালানোর লাইসেন্সই ছিল না সন্তোষ সাহানি (২৪) নামে ওই যুবকের। দুর্ঘটনার পরেই সে কলকাতা ছেড়ে ওড়িশার ভদ্রকে পালিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশের চাপে রবিবার ফিরে এলে হাওড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

লালবাজার জানায়, সন্তোষের বিরুদ্ধে জেনেশুনে মৃত্যু ঘটানোর ধারা (ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৪ ধারার পার্ট টু) যোগ করা হয়েছে। আগে তার বিরুদ্ধে পুলিশ গাফিলতির জেরে মৃত্যুর ধারায় মামলা রুজু করা করেছিল। রবিবার ওই যুবককে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

শনিবার সকালে কালীঘাট ট্রাম ডিপোর সামনে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান স্কুলশিক্ষিকা শুভলক্ষ্মী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন। সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ কালী টেম্পল রোডে তিনি ফুল কিনতে বেরিয়েছিলেন। কালীঘাট ট্রাম ডিপোর সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময়ে রাসবিহারীমুখী একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে এসে তাঁকে ধাক্কা মারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, গাড়ির গতি এতটাই ছিল যে ধাক্কায় শুভলক্ষ্মী ছিটকে গিয়ে গাড়ির বনেটের উপরে পড়েন। চালক গাড়ি না থামিয়ে তাঁকে ফের ধাক্কা মেরে পালায়। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা একটি পুলিশ গাড়ি ওই গাড়িটিকে আটকাতে গেলে সেটি গতি বাড়িয়ে পালায়।

তদন্তকারীরা জানান, ধৃত যুবক খিদিরপুরের ভূ-কৈলাস রোডের বাসিন্দা। তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। শুভলক্ষ্মীর মৃত্যুর পরে গাড়ির নম্বর খুঁজে সেটির মালিক পরীদেবী সাহানির নাম জানতে পারে পুলিশ। খিদিরপুরের সেই ঠিকানায় পৌঁছে পুলিশ জানতে পারে গাড়িটি নিয়ে বেরিয়েছিলেন পরীদেবীর ছেলে সন্তোষ। তাদের বৈদ্যুতিক ওয়্যারিংয়ের পারিবারিক ব্যবসা। সন্তোষ নিজেও ব্যবসার দেখাশোনা করে।

তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে, শনিবার সকালে সন্তোষ তার পাড়ার তিন বন্ধুকে নিয়ে বেরিয়েছিল ঢাকুরিয়া লেকের কাছে যাবে বলে। সে নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিল। দুর্ঘটনার পরে স্থানীয়দের হাতে মার খাওয়ার ভয়ে সে গাড়ির গতি বাড়িয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায়। রাসবিহারী মোড়ের কাছে পুলিশ তাকে গাড়ির কাচ নামাতে বলে। কিন্তু সন্তোষ সামনে থাকা একটি মালবাহী গাড়ির ‘রিয়ার গ্লাস’ ভেঙে জোর গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে পালায়। ঠিক সময়ে গাড়ির সামনে থেকে সরে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান ওই পুলিশকর্মীও।

পুলিশ প্রাথমিক ভাবে সন্তোষকে জেরা করে জেনেছে, সন্তোষ বাড়ি ফিরে গাড়িটি একটি গ্যারাজে ঢুকিয়ে দেয় এবং নিজের মোটরবাইক নিয়ে বার হয়। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, বন্ধুদের পরামর্শ মতো সে হাওড়া থেকে দুপুরের জনশতাব্দী এক্সপ্রেস চেপে ভদ্রক পৌছয়। সেখানে এক বন্ধুর আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়েছিল সে। কিন্তু পুলিশ সন্তোষকে ফেরাতে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে। রবিবার সে ফিরতেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুর্ঘটনার সময়ে সন্তোষ এবং তার বন্ধুরা মত্ত ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। আটক গাড়িটি গত কয়েক মাসে ১৪ বার ট্র্যাফিক নিয়ম অমান্য করেছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

Crime Arrest Accident Death

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}