পুনর্মিলন: ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্না মিশ্রাদেবীর। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
কুম্ভমেলায় হারিয়ে গিয়েছিলেন। উদ্ধার হয়েছিলেন গঙ্গাসাগর মেলা থেকে। অবশেষে দেড় মাস পরে মঙ্গলবার, ঘরহারা সেই বৃদ্ধা ফিরলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, কুম্ভে স্নান করতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা পঁচাত্তর বছরের এক বৃদ্ধাকে প্রায় তিন সপ্তাহ আগে গঙ্গাসাগর মেলার কাছে স্ট্যান্ড রোড থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়ার পরে ওই দিনই ছেলে নাতির সঙ্গে মধ্যপ্রদেশে ফিরে গিয়েছেন ওই বৃদ্ধা।
লালবাজার সূত্রের খবর, ৮ মার্চ মিশ্রাদেবীকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় গঙ্গাসাগর মেলার কাছে স্ট্যান্ড রোড এবং চ্যাপেল রোডের সংযোগস্থলে। তা বিদ্যাসাগর ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্টের নজরে পড়ে। এর পরেই স্থানীয় হেস্টিংস থানায় যোগাযোগ করেন ওই ট্র্যাফিক সার্জেন্ট। সাব ইনস্পেক্টর নাড়ুগোপাল সেন বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। কিন্তু অসুস্থতার কারণে বৃদ্ধা নিজের নাম কিংবা পরিচয় কিছুই বলতে পারেননি। এর পরেই পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে বেলেঘাটা মেন রোডে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোমে রাখার ব্যবস্থা করেন। ইতিমধ্যেই পরিবারের খোঁজ পেতে বৃদ্ধার ছবি তুলে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। তাতেও আশার আলো দেখা যায়নি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুলিশ সূত্রের খবর, হোমে থাকাকালীন কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন বৃদ্ধা। এর পরে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে হেস্টিংস থানার আধিকারিকেরা বৃদ্ধার সঙ্গে ফের কথা বলা শুরু করলে নিজের নাম বলতে পারেন তিনি। যেটুকু সামান্য কথা বলছিলেন তিনি প্রথমে তার কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ওই ভাষা বুঝতে না পারলেও এক অফিসারের সন্দেহ হয় সেটি মধ্যপ্রদেশের কোনও আঞ্চলিক ভাষা। তখন বৃদ্ধার ছবি দিয়ে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।’’
জানা যায়, তাঁর বাড়ি মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী থানা এলাকার সিংহনিবাসে। তিনি কুম্ভমেলা দর্শন করতে গিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ। স্থানীয় ওই থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও হয়েছিল। থানার মাধ্যমেই মিশ্রাদেবীর ছেলে ইন্দ্র যাদবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে মধ্যপ্রদেশ থেকেই তাঁরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। মঙ্গলবার কলকাতার হোমে এসে মাকে দেখতে যান ইন্দ্র। ছেলে এবং নাতিকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মিশ্রাদেবী। পর মুহূর্তেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরেন তিনি।
ইন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘মাকে অনেক খুঁজেছি। না পেয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। এলাকার কয়েক জনের সঙ্গে ইলাহাবাদের কুম্ভমেলায় গিয়েছিলেন মা। সেখানে দলছুট হয়ে যান।’’ এর পরে কোনও ভাবে উল্টো দিকের ট্রেনে চেপে কলকাতায় চলে আসেন মিশ্রাদেবী। এ দিকে, মাকে ফিরে পেয়ে পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি শিবপুরীর বাড়িতে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়ে গেলেন ইন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy