Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
POCSO

পকসো জটিলতায় জরুরি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

আলিপুর দায়রা আদালতের সরকারি আইনজীবী রাধাকান্ত মুখোপাধ্যায়ের মতে, “এ ভাবে বিশেষ আদালতে অচলাবস্থা নজিরবিহীন ঘটনা। কেউই বিচারপ্রার্থীদের কথা ভাবছেন না।”

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০২:২২
Share: Save:

বিচারক ও আইনজীবী দু’পক্ষের অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের জটে বৃহস্পতিবারও আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালতের অচলাবস্থা মিটল না। ওই দিন পকসো আদালতের বিচারক ও আলিপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বিচারক। সূত্রের খবর, দু’পক্ষই ছিল নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়। বৈঠকেও পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ চালিয়ে যাওয়ায় সমাধানসূত্র বেরোয়নি।

বিচারক দুর্ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ তুলে মাসখানেক আগে আইনজীবীদের একটি অংশ বিশেষ পকসো আদালত বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার পর থেকে ওই আদালত কার্যত অচল। সম্প্রতি বিশেষ পকসো আদালতের বিচারকও আইনজীবীদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বার অ্যাসোসিয়েশনে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। বিচারকের বক্তব্য, করোনা-বিধি মানা হচ্ছিল না বলেই আইনজীবীদের ভর্ৎসনা করা হয়েছিল। এক দিকে আইনজীবীরা বিধি ভাঙছেন। অন্য দিকে, তাঁরাই দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করছেন। বিচাপতির আরও বক্তব্য, এজলাসে তাঁরা হট্টগোল করে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।

আলিপুর আদালত সূত্রের খবর, প্রায় মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা হাজির না থাকায় শুনানি প্রক্রিয়া কার্যত বন্ধ রয়েছে। যদিও প্রতিদিন সরকারি আইনজীবী হাজির থাকছেন।

গুরুত্বপূর্ণ ওই আদালত চালু করতে জেলা বিচারক সচেষ্ট হলেও লাভ হল না। জেলা বিচারক দফতর সূত্রের খবর, এ বিষয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন। বিষয়টি আইনমন্ত্রী ও হাইকোর্টে জানানো হয়েছে।

ইতিমধ্যেই বিশেষ ওই আদালতে প্রায় হাজার দুয়েকের উপর মামলা বিচারাধীন বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘ ছ’মাস লকডাউন চলাকালীন আদালতে কোনও মামলার শুনানি হয়নি। শিশুদের যৌন নির্যাতনের গুরুত্বপূর্ণ বহু মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য করোনা আবহেও সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে জেলা বিচারকের নির্দেশে আলিপুর দায়রা ও ফৌজদারি আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

কিন্তু দু’পক্ষের এই দ্বন্দ্বে পকসো আদালত বন্ধ থাকায় বিচারপ্রার্থীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন আইনজীবীদের বড় অংশ। পকসো আদালতের পুরনো মামলাগুলির শুনানি বন্ধ থাকলেও নতুন কিছু মামলায় অন্য আদালতের আইনজীবীরা এসে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে নতুন মামলার শুনানি হচ্ছে। এ দিকে জমছে পুরনো মামলা। আইনজীবীদের বক্তব্য, এর কারণ, পুরনো মামলায় তালিকাভুক্ত আলিপুরের আইনজীবীরা রয়েছেন।সেখানে আইনি জটিলতার কারণে অন্য আদালতের আইনজীবীরা অংশ নিতে পারবেন না।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ছিলেন রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দ্রুত ওই আদালত চালু করা জরুরি। অচলাবস্থা কাটাতে দু’তরফের আন্তরিকতার প্রয়োজন রয়েছে।” আলিপুর দায়রা আদালতের সরকারি আইনজীবী রাধাকান্ত মুখোপাধ্যায়ের মতে, “এ ভাবে বিশেষ আদালতে অচলাবস্থা নজিরবিহীন ঘটনা। কেউই বিচারপ্রার্থীদের কথা ভাবছেন না।”

আলিপুর দায়রা আদালতের আইনজীবী তথা রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য ইন্দ্রনীল বসুর দাবি, “অতীতেও বিচারক এবং আইনজীবীদের মধ্যে মতভেদ হয়েছে। কিন্তু তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দু’পক্ষ বিষয়গুলি অতিরঞ্জিত করে গুরুত্বপূর্ণ আদালতকে অচল করে রেখেছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Pocso Child Rights
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy