Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জট কাটল না, স্কুল আজও বন্ধ

মঙ্গলবার এ ভাবেই থমকে রইল জি ডি বিড়লা স্কুল বিতর্ক।

জি ডি বিড়লার সামনে অভিভাবকদের বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

জি ডি বিড়লার সামনে অভিভাবকদের বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:১৬
Share: Save:

স্কুল কবে খুলবে, সিদ্ধান্ত হল না।

শিশু নিগ্রহের অভিযোগ ঘিরে তদন্তও এগোল না।

মঙ্গলবার এ ভাবেই থমকে রইল জি ডি বিড়লা স্কুল বিতর্ক।

স্কুল খোলার বিষয়ে আলোচনা করতে এ দিন পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মুখোমুখি বসেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকেরা। মূল দু’টি দাবিতে অভিভাবকেরা এখনও অনড়— প্রিন্সিপালকে অপসারণ ও গ্রেফতার করতে হবে। তাঁরা বৈঠকে জানিয়ে দেন, প্রিন্সিপাল পদ থেকে শর্মিলা নাথকে সরালে তবেই স্কুল খুলতে দেওয়া হবে। এই বৈঠকে অবশ্য প্রিন্সিপাল ছিলেন না। যোগ দেননি ছাত্রীটির বাবাও।

এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আজ, বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সময় চেয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ দিন প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকের পরে সাত সদস্যের অভিভাবক প্রতিনিধি দলের তরফে বলা হয়, ‘‘আমরা স্কুল চালু রাখতেই বলেছি। স্কুল থাকবে, বাচ্চারাও থাকবে। তবে প্রিন্সিপালকে সরতে হবে। এ দিন প্রথম ধাপ পেরোলাম। বুধবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’’ অভিভাবক ফোরামের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, বুধবার বিকেল ৪টে থেকে স্কুলের সামনে জমায়েত হবে।

এ দিকে, চার বছরের শিশুর উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সোমবার চার সদস্যের যে বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি করেছিল লালবাজার, তারা এ দিন কাজ শুরু করতে পারেনি। কারণ, কমিটিতে পুলিশ প্রতিনিধির নাম ঘোষণা হলেও শিক্ষা দফতর, রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন ও আইসিএসই বোর্ডের প্রতিনিধির নাম চূড়ান্ত হয়নি। পাশাপাশি এ দিন স্কুলের প্রিন্সিপালকে ডেকে পাঠিয়ে দীর্ঘ সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরেও কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি লালবাজারের গোয়েন্দারা। প্রিন্সিপাল শর্মিলাদেবীর দেওয়া সব জবাবে সন্তুষ্টও হতে পারেননি পুলিশ-কর্তারা। শর্মিলাদেবীকে এ জন্য ফের ডেকে পাঠানো হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং স্কুলের অন্যান্য কর্মীদের।

এ দিনই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে লালবাজারে এসে বয়ান নথিভুক্ত করান অভিযোগকারী বাবা এবং মা।

জিডি বিড়লা স্কুলের প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথকে অপসারণ ও তিনি গ্রেফতার না-হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার ব্যাপারে অনড় হলেও অভিভাবকদের একাংশের মুখে এ দিনও আবার ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে। বৈঠকের পরে তাঁরা বলতে শুরু করেন, পরীক্ষার সময় এ ভাবে স্কুল বন্ধ থাকা অসুবিধাজনক। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে স্কুল খোলা হোক। শিশুদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। অভিভাবক প্রতিনিধিরা অবশ্য জানান, যে সব পরীক্ষা চলছে, সেগুলির দিনক্ষণ বদল হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন।

এই মুহূর্তে যাবতীয় চাপানউতোর স্কুল কর্তৃপক্ষকে ঘিরে আবর্তিত হলেও গোটা বিষয়টিতে আইসিএসই বোর্ডেরও দায়িত্ব রয়েছে বলে এ দিন মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা প্রতিবাদ করবেন। ক্লাসও শুরু হবে। যে দোষী, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। আইসিএসসি বোর্ডেরও বিষয়টি দেখা উচিত।’’ বহিরাগতেরা নানা ছুতোয় স্কুলগুলি বন্ধ করে দিতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

স্কুলের পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিকাঠামো ঠিকঠাক রয়েছে কি না, তা দেখা এবং তদারকি করা তো সংশ্লিষ্ট বোর্ডের দায়িত্ব।’’ স্কুলগুলিকে পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রমাণপত্র সরকারের কাছে জমা দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE