বরাহনগর মাতৃসদনে চিকিৎসাধীন প্রসূতি রিয়া ঘোষের মৃত্যু কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের দাবি, সন্ধ্যার পরে বা রাতে একই রকম অবস্থা হতে পারে অন্য সঙ্কটজনক প্রসূতিরও। এর জন্য মাতৃসদনের বেহাল পরিকাঠামোকেই দায়ী করছেন তাঁরা।
অভিযোগ, বেহাল পরিকাঠামোরই শিকার হতে হয়েছে রিয়াকে। তাঁর পরিবার ও হাসপাতালের কিছু কর্মী জানাচ্ছেন, শনিবার তাঁর সিজার হওয়ার পরেই সংশ্লিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সুস্মিতা চৌধুরী চলে যান। বিকেলে রিয়ার শারীরিক সমস্যা হলেও চিকিৎসা হয়নি। কারণ বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে চিকিৎসকের ডিউটি ছিল তিনি চলে যাওয়ার পরে রাত ১০টায় আর এক জন চিকিৎসক আসেন। মাঝে ৫ ঘণ্টা চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ। সুস্মিতাদেবীকে বারবার ফোন করে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ কর্মীদের। সুস্মিতাদেবীর অবশ্য বক্তব্য, রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত জানানো হয়, রিয়া ভাল আছেন। তিনি বলেন, ‘‘দেড়টার পরে আবার ফোন আসে, তখন আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আমার বাড়িতেও তো কেউ খবর দিতে পারতেন!’’ সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, যে পরিকাঠামোয় কাজ করতে হয়, তাতে তিনি গেলেও রোগিণীর চিকিৎসা করা সম্ভব হতো না।
মৃতার পরিবার জানায়, রাত ৩টে নাগাদ রিয়াকে আরজিকরে নিয়ে গেলে জানানো হয় ঘণ্টাখানেক আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। রিয়ার আত্মীয়া সুপর্ণা ঘোষ বলেন, ‘‘বরাহনগরের হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময়েই মনে হয়েছিল মেয়েটা বেঁচে নেই।’’ চিকিৎসকদের অনুমান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিয়ার রক্তচাপ কমে গিয়েছিল। তাঁকে দ্রুত রক্ত দেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু মাতৃসদনে ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই। এমনকী রাতে অ্যানাস্থেটিস্ট না থাকায় জরুরি অস্ত্রোপচারও করা যায় না বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে চার জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সপ্তাহে দু’-তিন দিন করে আসেন। অন্য সময়ে সাধারণ মেডিক্যাল অফিসারই কাজ চালান।
বরাহনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক বলেন, ‘‘শুনেছি সংশ্লিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ফোন ধরেননি। তবে পাঁচ ঘণ্টা চিকিৎসক ছিলেন না, এটা বোধ হয় ঠিক নয়। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘এক জন উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy