Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Commerce

Higher Secondary: বাণিজ্য নিয়ে পড়ার ঝোঁক বাড়ছে উচ্চ মাধ্যমিকে

একই ছবি উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুলেও। সেখানকার শিক্ষক সৌগত বসু জানান, তাঁদের স্কুলে বিজ্ঞান শাখায় ১২০টি আসন রয়েছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২১ ০৬:৫১
Share: Save:

এ যেন অনেকটাই উল্টো স্রোত। বিজ্ঞান নয়, উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তিতে পড়ুয়াদের পছন্দের বিষয় বাণিজ্য শাখা। চলতি বছরে বেশ কিছু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে এখনও পর্যন্ত যত আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলি দেখে প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বাণিজ্য শাখায় পড়ার ঝোঁক বাড়ছে পড়ুয়ামহলে। এই প্রবণতা দেখা গিয়েছিল গত বছরেও।

হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, “এখনও পর্যন্ত যত আবেদন এসেছে তাতে পরিষ্কার, বাণিজ্য শাখায় ভর্তির প্রবণতা বেশি।’’ হাওড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমলকুমাল শীল জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলে বাণিজ্য শাখায় প্রথমে ৪০টি আসন ছিল। সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ৬০ করা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বাণিজ্য শাখায় আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ১০০-র কাছাকাছি। অন্য দিকে, বিজ্ঞান শাখায় ১০০টি আসনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত আবেদন পড়েছে ৭০টির জন্য। শিয়ালদহ টাকি বয়েজ়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক জানান, তাঁদের স্কুলে বাণিজ্য শাখায় ৫০টি আসন রয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই ৭৫টি আবেদন জমা পড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞান শাখায় ১০০টি আসন থাকলেও জমা পড়েছে ৮০-৮৫টি আবেদন।

একই ছবি উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুলেও। সেখানকার শিক্ষক সৌগত বসু জানান, তাঁদের স্কুলে বিজ্ঞান শাখায় ১২০টি আসন রয়েছে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৮০ জন। অন্য দিকে বাণিজ্য শাখায় রয়েছে ৩০টি আসন। কিন্তু, আবেদন জমা পড়েছে ৯২টি। সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে বাণিজ্য শাখা নেই। তাই বেশ কিছু পড়ুয়া বাণিজ্য নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়বে বলে অন্য স্কুলে চলে গিয়েছে। মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, “বাণিজ্য শাখায় ৭০ থেকে ৭৫টি আসন ভর্তি হয়ে গিয়েছে। সেখানে বিজ্ঞানে ভর্তি হয়েছে ৪০ জনের মতো।’’

কেন বিজ্ঞানকে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে বাণিজ্য? অমলবাবুর মতে, “করোনার কারণে গত দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে প্র্যাক্টিক্যাল করতে পারেনি ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু বাণিজ্য শাখায় প্র্যাক্টিক্যাল বিষয় নেই। তাই হয়তো অনেকে মনে করছে, বিজ্ঞান নিয়ে পড়লে কিছুটা ফাঁক থেকে যেতে পারে।’’ স্বাগতাদেবীর কথায়, ‘‘একে বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনার চেয়ে বাণিজ্য শাখায় পড়াশোনার খরচ বেশ খানিকটা কম। তা ছাড়া আজকের দিনে বাণিজ্য নিয়ে পড়াশোনা করে চাকরির সুযোগও বেড়েছে।’’

অর্থনীতির অধ্যাপক অভিরূপ সরকার জানান, বিজ্ঞানের চেয়ে বাণিজ্যের চাহিদা বেশি— দিল্লিতে এই প্রবণতা বেশ কয়েক বছর ধরেই রয়েছে। তাঁর মতে, “ইদানীং কালে দেখা গিয়েছে, বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেই চাকরি মিলছে না। সঙ্গে এমবিএ-র মতো বাড়তি যোগ্যতাও অর্জন করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় বাণিজ্য শাখায় পড়াশোনা করে এমবিএ পাশ করে দ্রুত চাকরি মিলছে।’’ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক অভিজিৎ কুণ্ডু আবার মনে করেন, ‘‘আগের তুলনায় এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু স্নাতক স্তরে পদার্থবিদ্যা বা রসায়নের মতো বিষয়ের চাহিদা আগের মতো নেই। কারণ, সেগুলি পড়েও অনেক সময়ে চাকরি পেতে এমবিএ করতে হচ্ছে। পড়ুয়ারা অনেকেই মনে করছে, উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান শাখায় যা সিলেবাস, তার তুলনায় বাণিজ্য শাখায় সিলেবাসের ভার বেশ খানিকটা কম। ফলে তুলনায় সহজ বাণিজ্য শাখায় পড়ে চাকরির বাজার যখন ভাল, তখন কেন তারা বাণিজ্য নিয়ে পড়বে না— এই ধারণাও কাজ করছে অনেকের মধ্যে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Commerce Higher Secondary Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy