Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ঠিক যেন সিনেমার দৃশ্য! দিনেদুপুরে শহরে চপারে মাথা কেটে উল্লাস খুনির

রাস্তায় ফেলে এক ব্যক্তির গলায়, বুকে চপারের কোপ মারছে উন্মত্ত এক ব্যক্তি। তাকে থামাতে এলেন এক যুবক। তাঁর হাতেও কোপ বসিয়ে দিল। তার পরে রক্তাক্ত চপার হাতেই এলাকায় ছোটাছুটি শুরু করল সে!

পরিষ্কার করা হচ্ছে ইশামুলকে (ইনসেটে) খুনের জায়গা। নিজস্ব চিত্র

পরিষ্কার করা হচ্ছে ইশামুলকে (ইনসেটে) খুনের জায়গা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

ঠিক যেন হিন্দি সিনেমার দৃশ্য!

রাস্তায় ফেলে এক ব্যক্তির গলায়, বুকে চপারের কোপ মারছে উন্মত্ত এক ব্যক্তি। তাকে থামাতে এলেন এক যুবক। তাঁর হাতেও কোপ বসিয়ে দিল। তার পরে রক্তাক্ত চপার হাতেই এলাকায় ছোটাছুটি শুরু করল সে!

শনিবার দুপুরে এই ঘটনার সাক্ষী রইল কলকাতা বন্দরের রাজাবাগান এলাকার শিমপুকুর লেন। পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় মারা গিয়েছেন মহম্মদ ইশামুল হক (৪৮) নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। আহত হন মহম্মদ বশির নামে এক যুবক। মহম্মদ কালাম নামে ওই হামলাকারীকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়দের একাংশ। বশির ও কালাম দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে এসএসকেএম এবং পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

আরও পড়ুন: রজতের মৃত্যুতে কার লাভ, প্রশ্ন সেটাই

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইশামুল স্থানীয় কসাইখানায় চাকরি করতেন ও সন্ধ্যায় গোমাংস বিক্রি করতেন। তাঁর স্ত্রী, চার ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। কালামও ওই এলাকাতেই থাকে। তার বাড়ির নীচেই দাদা ইসমাইলের একটি মাংসের দোকান রয়েছে। বশির সেই দোকানের কর্মচারী। এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ ইশামুল শ্বশুরবা়ড়ি থেকে শিমপুকুর লেনের বাড়িতে ফিরছিলেন। সে সময়ে কালাম চপার হাতে বশিরের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করে। ইশামুল তা থামাতে গেলে কালাম তার উপরে চড়াও হয় এবং ঝগড়ার মাঝে গলায় চপারের কোপ বসিয়ে দেয়। ইশামুল রাস্তায় পড়ে গেলেও থামেনি কালাম। একের পর এক কোপ বসাতে থাকে তার গলা, বুকে। বশির আটকাতে গেলে তাঁর হাতেও কোপ দেয় কালাম।

আরও পড়ুন: মাকে তাড়িয়ে ধৃত, ছাড়ালেন প্রৌঢ়াই

মহম্মদ আশরফ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘গলির মুখে দাঁড়িয়েছিলাম। দেখি কালাম রক্তমাখা চপার হাতে আসছে। করিম, বাবলু, মুক্তার নামে কয়েক জন আটকাতে গেলে ওঁদের দিকেও তেড়ে যায় সে।’’ তিনি জানান, তখনই কালামের দাদা ইসমাইল হাজির হলে চপার ফেলে দেয় সে। এর পরেই কয়েক জন কালামকে ধরে ফেলেন। বাতিস্তম্ভে বেঁধে শুরু হয় গণপিটুনি। চোখমুখ থেঁতলে যায় কালামের। পরে ডিসি (বন্দর) ওয়াসিম রেজার নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ইশামুলকে এসএসকেএম নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান কয়েক জন।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, পুলিশ ইসমাইলের দোকান থেকে সব ছুরি, চপার বাজেয়াপ্ত করছে। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা চাপচাপ রক্ত ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাসিন্দাদের একাংশ জানান, ইশামুল শান্ত, নির্বিরোধী বলেই পরিচিত। তাঁর কোনও শত্রুও ছিল না। কালাম রগচটা বলে পরিচিত হলেও এমন কাণ্ড আগে কোনও দিন সে ঘটায়নি। তাই নেহাতই রাগের বশে নাকি পুরনো আক্রোশের জেরে এই ঘটনা, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। এলাকার একটি সূত্রের দাবি, হাজার পাঁচেক টাকার লেনদেন নিয়ে তাঁদের মধ্যে গোলমাল ছিল। তবে এ দিন রাতে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কালাম বিয়ে করেছিল। তার বিয়ে নিয়ে কিছু অশালীন মন্তব্য করাতেই সে রাগের বশে ইশামুলকে খুন করে বলে জেরায় দাবি করেছে কালাম।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Police Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE