—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হারানো চাকরি ফেরত চাই! সম্প্রতি একটি বাংলা সিনেমায় নাবালিকা স্কুলপড়ুয়াকে অপহরণ এবং পণবন্দি করার পরে মুক্তিপণ হিসাবে এমনই দাবি রেখেছিলেন সাফাইকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করা, সদ্য কাজ হারানো নায়ক। শেষে পর্যন্ত চাকরি ফিরে পাওয়ার আশ্বাস পেলেও সেই নায়ককেই প্রশ্ন করতে শোনা যায়, প্রতিদিন যে অপমান, লাঞ্ছনা এবং হেনস্থার মুখে পড়তে হয় কর্মক্ষেত্রে, তার জন্য যে মানসিক চাপ তৈরি হয়, তার কী হবে?
কর্মক্ষেত্রে এমন চাপের অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। কখনও উর্দিধারীর এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে সাধারণ মানুষকে খুন করার ঘটনা ঘটার পরে সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীর দীর্ঘদিন ছুটি না পাওয়ার দিকটি সামনে আসে। কখনও কোনও পুলিশকর্মী সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পরে উঠে আসে কর্মস্থলে তাঁর হেনস্থার নানা দিক। ওড়িশায় আবার প্রসবযন্ত্রণা দেখেও অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি না দেওয়ায় গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ সামনে আসে। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার পরে প্রশ্ন ওঠে, তরুণী কর্মক্ষেত্রে কোনও হুমকির মুখে পড়েননি তো? পড়লেও
কর্মক্ষেত্রে কারও সঙ্গে বিষয়টি ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ কি তিনি পেয়েছিলেন?
মনোরোগ চিকিৎসক থেকে সমাজতত্ত্বের শিক্ষকেরা বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই সুযোগ মেলে না। এতেই বাড়তে থাকে মানসিক চাপ। যা এক সময়ে মানসিক অসুখের আকার নেয়। এই পরিস্থিতিতেই গত ১০ অক্টোবর ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস’-এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘প্রায়রিটাইজ়িং মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড মেন্টাল ওয়েলবিয়িং অ্যাট ওয়ার্কপ্লেস’, অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে মানসিক সুস্বাস্থ্য এবং মানসিক ভাবে ভাল থাকাকে এ বারের বিষয় হিসাবে উল্লেখ করেছে। আজ, ৬ নভেম্বর ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্রেস অ্যাওয়ারনেস ডে’। মনোরোগ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মানসিক চাপ কমাতে না পারলে কর্মক্ষেত্রে কেন, কোথাওই ভাল থাকা সম্ভব নয়। এই দুই দিবস ঘিরে এ বিষয়েই সচেতনতার কথা বলছেন তাঁরা।
মনোরোগ চিকিৎসক দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেকেই এখন দিনের বেশির ভাগ সময় কর্মক্ষেত্রে কাটান। কিন্তু সেখানে সমস্যা হলে সে কথা কাউকে বলতে পারেন না। এতেই বাড়ে জটিলতা। অফিস কর্তৃপক্ষকেও বুঝতে হবে, মাথা ব্যথা, জ্বর, বমি, গা-ব্যথার মতো মানসিক অস্বস্তি, মানসিক চাপও একটা ছুটি নেওয়ার মতো বিষয়। এ ব্যাপারে হয় ছুটি দেওয়া হয় না, না হলে ছুটি নেওয়ার জন্য পরে ‘তুমি তো মানসিক ভাবে স্থির নয়’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়।’’
মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেলের কথায়, ‘‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ উত্তরোত্তর বাড়ছে। কোনও কাজ হয়তো বুধবার দিলেও হবে, কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাপিয়ে দিচ্ছেন বলে অনেকেই তা আগেভাগে শেষ করে দেওয়ার কথা দিয়ে ফেলেন। চাপের শুরু এটাই। এর সঙ্গেই সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে হবে। চাপমুক্ত কর্মক্ষেত্র পেতে সেটাও জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy