এটাই মিনিবাসের স্ট্যান্ড। বি বা দী বাগে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
এ যেন সর্ষের মধ্যেই ভূত। শহরের পথে আইন রক্ষার দায়িত্ব মূলত যাঁদের উপরে, তাঁরাই আইন ভাঙছেন দিনের পর দিন ধরে। আর তা নিয়ে উদাসীন খোদ প্রশাসন।
নামে এটা বাসস্ট্যান্ড। যদিও তার বেশিরভাগ অংশেরই দখল নিয়েছে মোটরবাইক। বাসস্ট্যান্ডে বাইক রাখা এই কর্মীদের সিংহভাগেরই কর্মস্থল লালবাজার। অধিকাংশই পুলিশ, কেউ বা সাধারণ কর্মী। বাসস্ট্যান্ডের বাকি অংশে দাঁড়িয়ে গুটিকয় বাস। সকাল থেকে এসে দাঁড়াচ্ছে একের পর এক বাইক। সেগুলি নিশ্চিন্তে রেখে কাজে চলে যাচ্ছেন কর্মীরা। আর বাসস্ট্যান্ডে জায়গা না পেয়ে সারা দিন বহু বাস দাঁড়িয়ে থাকছে রাস্তার ধারে।
রোজকার এই ছবিটা বি বা দী বাগ মিনিবাস স্ট্যান্ডের। প্রশ্ন উঠেছে, শহরের প্রাণকেন্দ্রে অন্যতম বড় একটি বাসস্ট্যান্ডে এ ভাবে কি দিন পর দিন মোটরবাইক রাখা যায়? বাসস্ট্যান্ডকে কি এ ভাবে ব্যক্তিগত মোটরবাইক রাখার জায়গা বানিয়ে ফেলা যায়?
মোটরবাইকের মালিকেরা যুক্তি দিচ্ছেন, সারা দিনের জন্য বাইক দাঁড় করিয়ে রাখার তেমন নির্দিষ্ট জায়গা নেই ওই এলাকায়। বাধ্য হয়ে অফিসপাড়ার কর্মীদের একটা বড় অংশ পার্কিংয়ের জন্য নির্ভর করেন এই বাসস্ট্যান্ডের উপরেই। এমনকী, পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই লালবাজার চত্বরেও। ফলে পুলিশকর্মীদেরও মোটরবাইক রাখার জায়গাও সবেধন ওই বাসস্ট্যান্ড।
আর এই ‘স্বঘোষিত’ পার্কিং নিয়ে আশ্চর্য উদাসীন খোদ লালবাজার। এলাকায় কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী জানালেন, এই স্ট্যান্ডে মোটরবাইক রাখা বা না-রাখা নিয়ে তাঁদের কখনও কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। লালবাজারের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের তো নিজস্ব পার্কিংয়ের জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে ওই জায়গাটা ব্যবহার করতে হয়। না হলে এত পুলিশের এত মোটরবাইক থাকবে কোথায়?’’
তা হলে কি এটাই ধরে নেওয়া যায়, পার্কিংয়ের জায়গা না পাওয়া গেলে শহরের যে কোনও বাসস্ট্যান্ডে ব্যক্তিগত মোটরবাইক রাখা যাবে? এই প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি পুলিশের তরফে। তবে লালবাজারের ওই কর্তা জানিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতে তাঁরা রাজি নন। দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবেই পুলিশকর্মীদের মোটরবাইক রাখা হচ্ছে ওই স্ট্যান্ডে, ভবিষ্যতেও হবে।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, শহরের যে কোনও জায়গায় মোটরবাইক দাঁড় করানো নিয়ে একটু এ দিক-ও দিক হলেই আইন দেখিয়ে ব্যবস্থা নেন পুলিশকর্মীরা। অথচ এ ক্ষেত্রে পুলিশ নিজেই আইন ভাঙছে দিনের পর দিন। একটি সরকারি বাসস্ট্যান্ডকে নিজেরাই বাইক রাখার এলাকা বানিয়ে ফেলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy