রাজকুমার মিত্র। (ডান দিকে) নারকেলডাঙা থানায় তাঁর দায়ের করা অভিযোগ। রবিবার।—নিজস্ব চিত্র।
মিছিলের মধ্যে কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ফরজানা আলমকে কাজ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন এক যুবক। অভিযোগ, এর জন্য শাসক দলের কর্মীদের হাতে মার খেতে হয়েছে তাঁকে। নারকেলডাঙা থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রহৃত যুবক। বেলপাহাড়িতে যেমন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করার ‘অপরাধে’ শিলাদিত্য চৌধুরী নামে স্থানীয় এক কৃষককে মাওবাদী বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও তেমনই আচরণ করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রহৃত যুবকের পাড়ার বাসিন্দাদের একাংশ।
রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা থানা এলাকার গড়পার রোডে। পুলিশ জানায়, আহত ওই যুবকের নাম রাজকুমার মিত্র। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশের বক্তব্য, ওই যুবক যাঁদের নামে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন, বিপ্লব মুখোপাধ্যায় নামে তাঁদেরই এক জন থানায় এসে রাজকুমারের নামে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, দু’তরফের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরজানা অবশ্য পুরো ঘটনার পিছনে চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ২১ জুলাই শহিদ দিবসের সমর্থনে মিছিল বার করেন নারকেলডাঙা এলাকার কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ফরজানা আলম। মিছিলটি গড়পার রোড দিয়ে যাওয়ার সময়ে রাজকুমার কিছু কথা বলেন ফরজনাকে। পরে রাজকুমার জানান, তিনি ডেপুটি মেয়রকে বলেছিলেন, “শুধু মিছিল করলে হবে না, এলাকায় কাজও করতে হবে।” তাঁর অভিযোগ, তখনকার মতো মিছিলটি এলাকা ছেড়ে চলে গেলেও দু’ঘণ্টা পরে স্থানীয় তৃণমূলকর্মী বিপ্লবের (জয়) নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশেক যুবক গড়পার রোড ফিরে আসেন।
পুলিশকে রাজকুমার জানান, তিনি সেই সময়ে এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ডেপুটি মেয়রকে অপ্রিয় প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলে ওই যুবকেরা তাঁকে মাটিতে ফেলে মারধর শুরু করেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁকে উদ্ধার করেন। তবে এখানেই হেনস্থার শেষ হয়নি। রাজকুমারের দাবি, এ নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, বিপ্লব আগেই তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। রাজকুমার বলেন, “যারা আমাকে মারধর করল, তারাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশের কাছে।” এলাকাবাসীরাও জানিয়েছেন, বিপ্লবের নেতৃত্বেই বাইরের তৃণমূলকর্মীরা প্রথমে রাজকুমারের উপর চড়াও হলেও তিনি কাউকে মারধর করেনি।
এ প্রসঙ্গে ডেপুটি মেয়র এ দিন বলেন, “আমি রাজকুমারকে ভাল ভাবে চিনি। ও আমাকে একটা প্রশ্ন করেছিল। আমিও তার উত্তর দিয়েছি। ও যে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছে, তা মিথ্যা।” ফরজানার পাল্টা অভিযোগ, “কিছু লোক আমাদের বদনাম করতেই এ ধরনের অভিযোগ করছে। পুরোটাই চক্রান্ত।” অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মী বিপ্লব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ দিন বার বার যোগাযোগ করা হলেও, তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইলও বন্ধ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy