গুলাম মুস্তাফা
মহাবীরতলায় ক্লাবের সামনেই বসেছিলাম। হঠাৎ বীভৎস জোরে কিছু ভেঙে পড়ার শব্দ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দৌড় শুরু করি। চিৎকার করে বন্ধুদেরও ডাকি। ওরাও বেরিয়ে এসেছে তত ক্ষণে। ঠিকই আন্দাজ করেছিলাম। মাঝেরহাট ব্রিজটাই ভেঙে পড়েছে!
চার দিকটা কেমন লন্ডভন্ড অবস্থা। ভেঙে পড়া ব্রিজের উপর মুখ থুবড়ে পড়ে এক রাশ গাড়ি, বাস, মিনিবাস, বাইক। ছুটে গেলাম মিনিবাসটার কাছে। ভিতরে লোকগুলো তখন ছটফট করছে। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। উঠে পড়লাম। এক এক করে সকলকে বার করে আনি আমরা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সকলের শরীর। প্রত্যেককে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওদের মধ্যে কয়েক জনের শরীর নিথর ছিল। বাকিরা কে কেমন আছেন, কে জানে!
এমনটা যে কোনও দিনই হতে পারত। প্রতি দিন ব্রিজের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় মনে মনে এটাই ভাবতাম। কেন জানেন? ইদানীং ব্রিজটা ভীষণ কাঁপত। এখানে যে মেট্রো প্রোজেক্টের কাজ হচ্ছে এই ঘটনার জন্য ওটাই দায়ী জানেন! কত বার বলেছি ওদের ইঞ্জিনিয়ারদের। এমন ভাবে কাজ করবেন না। মাঝেরহাট ব্রিজ অনেকটা পুরনো। ওর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় ইদানীং কাঁপত। বাইক নিয়ে গেলেও বোঝা যেত। কিন্তু, ওঁরা তা মানতে চাইতেন না। পাল্টা জিজ্ঞেস করতেন, ‘‘আপনারা ইঞ্জিনিয়ার, নাকি আমরা?’’ বলেছিলাম, আমরা হয়তো ইঞ্জিনিয়ার নই। কিন্তু, এ ভাবে যে কাজ করা যায় না সেটা বুঝি। বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। ওঁরা শোনেননি। ও ভাবেই কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আগে উদ্ধার ও চিকিৎসা হোক, বাকিটা পরে দেখা যাবে: দার্জিলিং থেকে মুখ্যমন্ত্রী
আরও পড়ুন: দেখে নিন ভেঙে পড়া মাঝেরহাট ব্রিজের ছবি
আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল মাঝেরহাট ব্রিজ, মৃত অন্তত ৫, সেতুর নীচে আটকে কেউ কেউ
ব্রিজের উপরের দিকটা তো আমরা দেখেছি। সেখানেই এমন ভয়াবহ অবস্থা। নীচে যেখানে ভেঙে পড়েছে, সেখান দিয়ে তো মানুষ জন যাতায়াত করেন। ওখানে তো রাস্তা রয়েছে। মেট্রো প্রোজেক্টের কর্মীদের থাকার জন্য কয়েকটা ঘরও রয়েছে। সেখানে কেউ চাপা পড়ে আছে কি না কী করে বুঝব! শুনছি, সেখানে চার-পাঁচ জন চাপা পড়েছেন। খুবই সিরিয়াস অবস্থা।
(শহরের প্রতি মুহূর্তের সেরা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy