ট্যাক্সির যাত্রী প্রত্যাখ্যান আটকাতে জুলাইয়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। স্থির হয়েছিল এ বার থেকে যাত্রী প্রত্যাখ্যান করলে মোটর ভেহিক্লস আইন অনুযায়ী ট্যাক্সিচালকের তিন হাজার টাকা জরিমানা হবে। কিন্তু শনিবার শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে দাঁড়িয়ে সেই পরিবহণমন্ত্রীই জানালেন, জরিমানা হিসেবে ওই টাকা বেশি। উল্টে এ দিন তিনি চালকদের আশ্বাসও দেন, জরিমানার বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, গত তিন মাসে যাত্রী প্রত্যাখ্যানের জন্য ৩০০টি মামলা দায়ের হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই জরিমানা ছিল তিন হাজার টাকা। কিন্তু আচমকা ৭ অগস্ট ধর্মঘট ডেকে পুলিশ-প্রশাসনকে দিশেহারা করে দেন ট্যাক্সিচালকেরা। পুলিশি জুলুমের অভিযোগ তুলে ও তার প্রতিবাদে বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
তার পরেই শনিবার মন্ত্রীর বক্তব্যকে অনেকে ট্যাক্সিচালকদের চাপের কাছে নতি স্বীকার হিসেবে দেখছেন। শিয়ালদহে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী ট্যাক্সিচালকদের বলেন, “তিন হাজার টাকা জরিমানা হিসেবে বেশি। আপনাদের স্বার্থও দেখতে হবে। যাত্রী প্রত্যাখ্যান হলে পুলিশ নিয়মমাফিক জরিমানা করছে। আপনারাও যাত্রী প্রত্যাখ্যান করবেন না।” মন্ত্রী বলেন “ট্যাক্সিমালিকেরা চান, জরিমানার টাকা চালকেরা দিন। গাড়ি ভাঙচুর, গোলমাল সৃষ্টি করতে চালকদের সামনে ঠেলে দিচ্ছেন ইউনিয়ন নেতারা। আর গ্রেফতার হয়ে জেলে থাকছেন নিরীহ চালকেরা।”
প্রশাসনের উপরে ট্যাক্সিচালকদের আস্থা ফেরাতে এ দিন শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনে যান মদন মিত্র। তিনি জানান, যে সব ট্যাক্সিমালিক গাড়ি বার করছেন না, দরকারে তাঁদের গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে। মন্ত্রী বলেন, “১৩ অগস্ট ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে চালকদের সঙ্গে তাঁদের ক্ষোভ বিষয়ে কথা বলব।”
৭ তারিখ ভাঙচুরের ঘটনায় ২২ জন গ্রেফতার হন বলে জানান মন্ত্রী। গ্রেফতার হওয়া চালকদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামীকাল, সোমবার দুপুর ২টোয় সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে গিয়ে আইন অমান্য করবে বামপন্থী ট্যাক্সিচালক সংগঠনগুলি। এ দিন সিটু এবং এআইটিইউসির ট্যাক্সিচালক সংগঠনের এক যৌথ কনভেনশনে এই সিদ্ধান্ত হয়। সিটু নেতা প্রাক্তন শ্রমমন্ত্রী অনাদি সাহু বলেন, “সরকার চালকদের দাবি না মানলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে।” সিটু নেতা সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পরিবহণমন্ত্রী যে ভাবে ট্যাক্সিচালকদের কার্যত হুমকি দিচ্ছেন তা দুর্ভাগ্যজনক। মন্ত্রী আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে না গিয়ে স্বৈরতন্ত্রের পথে হাঁটছেন।”
পুলিশ জানায়, শনিবারই হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকায় একটি ট্যাক্সি ভাঙচুরের খবর রটতেই রাস্তায় ট্যাক্সি কমতে থাকে। কলকাতার দিক থেকে আসা ট্যাক্সিও কমে যায়। ফলে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন প্রিপেড ট্যাক্সি বুথে অন্য দিনের তুলনায় এ দিন ট্যাক্সি কম ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy