সকাল বা রাতে সপরিবার শিয়ালদহ কিংবা কলকাতা স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে প্ল্যাটফর্মের বাইরে এসে প্রি-পেড বুথ থেকে ট্যাক্সি ধরবেন ভেবেছেন। কিন্তু প্ল্যাটফর্মের বাইরে পা রাখার আগেই দেখবেন, ট্যাক্সিচালকেরা আপনাকে ঘিরে ধরেছেন। এমনকী, গন্তব্য কোথায় জানতে চেয়ে নিজেদের মর্জিমতো ভাড়াও চাইছেন। তাঁদের কথা না শুনে এগিয়ে গেলেই আপনার হাত বা মালপত্র ধরে টানাটানি করবেন ওই চালকেরা। এ বার ওই চালকদের বাগে আনতে শিয়ালদহ এবং কলকাতা স্টেশনে নতুন ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে লালবাজার। ওই দুই স্টেশনের প্রবেশপথে এ জন্য দু’টি করে স্ক্যানার বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কী ভাবে কাজ করবে নয়া ব্যবস্থা? কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, এ জন্য প্রতিটি ট্যাক্সিকে পুলিশের তরফে এক ধরনের হলোগ্রাম দেওয়া হবে। সেটি সাঁটা থাকবে ট্যাক্সির উইন্ডস্ক্রিনে। কলকাতা বা শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে কোনও ট্যাক্সি এলে প্রবেশপথে থাকা স্ক্যানার হলোগ্রামটি স্ক্যান করবে। ফলে সেই ট্যাক্সির নম্বর সঙ্গে সঙ্গে চলে যাবে পুলিশ এবং প্রি-পেড বুথে থাকা কর্মীর কাছে। তিনি পরপর সেই নম্বর দেখে লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের থেকে নির্দিষ্ট ভাড়া নিয়ে তাঁদের দু’টি স্লিপ দেবেন। গন্তব্যে পৌঁছে স্লিপের একটি অংশ যাত্রী দেবেন চালককে।
লালবাজারের বক্তব্য, এই ব্যবস্থা চালু হলে প্রি-পেড বুথ এড়িয়ে কোনও ট্যাক্সিচালক লাইনের বাইরে থেকে নিজের পছন্দ মতো ভাড়ায় যাত্রী তুলতে পারবেন না। ট্যাক্সিদের হলোগ্রাম দেওয়া শেষ হলেই প্রথম দফায় কলকাতা স্টেশনে ওই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ শেষ হলে একই ব্যবস্থা চালু হবে শিয়ালদহ স্টেশনেও।
যাত্রীদের ন্যায্য ভাড়ায় সহজে ট্যাক্সি-পরিষেবা দিতে হাওড়া, কলকাতা ও শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে কলকাতা বিমানবন্দরের আদলে প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ তৈরি করেছিল সরকার। নিয়ম অনুযায়ী, ওই বুথের কাউন্টারে নিজের গন্তব্য জানিয়ে নির্দিষ্ট ভাড়া দিয়ে দু’টি স্লিপ নিতে হয় যাত্রীকে। গন্তব্যে পৌঁছে ওই স্লিপের একটি অংশ চালককে দিয়ে অন্যটি রেখে দেন যাত্রী। চালক ওই স্লিপ প্রি-পেড বুথে দেখিয়ে টাকা নিয়ে নেন। ফলে এক দিকে যেমন যাত্রীদের হয়রানি বা প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়তে হয় না, তেমনই বেশি ভাড়াও গুনতে হয় না এই ব্যবস্থায়।
কিন্তু যাত্রীরা বার বার অভিযোগ করেছেন, কলকাতা এবং শিয়ালদহ স্টেশনে প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথের লাইন মানা বা সুনির্দিষ্ট ভাবে ট্যাক্সি দাঁড়ানোর কোনও বালাই নেই। বুথ পেরিয়ে একেবারে প্ল্যাটফর্মের সিঁড়িতে উঠে যান এক শ্রেণির ট্যাক্সিচালক। নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে যথেচ্ছাচার। লালবাজারের দাবি, নতুন ব্যবস্থা চালু হলে ট্যাক্সি চালকদের হাতে যাত্রীদের হেনস্থা কমবে।
যদিও যাত্রীদের একটা বিরাট অংশের বক্তব্য, পুলিশ যতই হলোগ্রাম লাগাক বা স্ক্যানার বসাক না কেন, আগে শিয়ালদহের শপিং মলের সামনের রাস্তায় অহেতুক বাস দাঁড়িয়ে থাকা তারা বন্ধ করুক। কারণ ওই ব্যবস্থা চালু হলেই ট্যাক্সি চালকেরা যাত্রীদের নিয়ে শিয়ালদহের ভিতরে যেতে চাইবেন না।
এ কারণে প্রথমত, শিয়ালদহ ঢোকার মুখে এক দফা দেরি হবে। তার পরে ওই মোড় থেকে মালপত্র নিয়ে হেঁটে স্টেশন যেতে আরও ভোগান্তিতে পড়বেন যাত্রীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy