মিল: ঝগড়া শেষে আলিঙ্গন। শনিবার, ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
ধর্মতলার চারমাথা মোড়ে বিস্ফারিত চোখে হেঁটে বেড়াচ্ছেন এক যুবক। পিছন পিছন হাতজোড় করে একটি বাসের কন্ডাক্টর। কয়েক বার চেষ্টার পরে হাল ছেড়ে দিয়ে কন্ডাক্টর বললেন, ‘‘উনি দাঁড়াচ্ছেনই না। ক্ষমা চাইব কী করে!’’
এর পরেই হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে যুবক বললেন, ‘‘বলুন কী বলবেন?’’ কন্ডাক্টরের আকুতি, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে, পায়ে ধরছি।’’ জবাব এল, ‘‘পায়ে ধরতে হবে না। গালাগালি না দিলেই পারতেন। ধাক্কা দিলেন কেন?’’ এ বার নাছো়ড় কন্ডাক্টর। বললেন, ‘‘আবার মিথ্যা বলছেন। আমি গালাগালি দিইনি। আপনি ধাক্কা মেরেছেন। ক্ষমা চাইছি বলে মিথ্যা বলবেন না।’’
সমঝোতার চেষ্টা মুহূর্তে বদলে গেল বচসায়। খানিক তর্কাতর্কির পরে এ বার যুবক ঠিক করলেন, থানায় অভিযোগ করবেনই। মত বদলাবেন না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত নিজেরাই রাস্তায় কোলাকুলি করে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলেন।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার বিকেলে। যাজ্ঞিক অগ্রবাল নামে এক যুবক ধর্মতলা মোড়ে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্টের কাছে একটি বেসরকারি বাসের চালক এবং কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ করেন। ওই যুবকের অভিযোগ, ‘‘আমি প্রতিবন্ধী। এ দিন বেহালা থেকে বাসে উঠি। কিন্তু, নির্দিষ্ট জায়গায় নামানোর বদলে রাস্তার মাঝেই জোর করে কন্ডাক্টর নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নামতে না চাওয়ায় আমায় গালিগালাজ করেন। ধাক্কাও মারেন।’’ যদিও কন্ডাক্টর অষ্ট ঘোষের দাবি, ‘‘উনিই যেখানে স্টপেজ নয়, সেখানে নামাতে বলছিলেন। শুনিনি বলে আমাদের গালিগালাজ করেছেন। আমরা কোনও ঝামেলা করিনি। বাসের সব লোক আসল কথা পুলিশকে বলেছেন।’’ কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট বললেন, ‘‘বাসের যাত্রীরা যাজ্ঞিকের বিরুদ্ধে বলছিলেন। তাঁদের দাবি, প্রতিবন্ধী বলে কন্ডাক্টরকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছিলেন উনি।’’
ভুল যখন করেননি ক্ষমা চাইলেন কেন? কন্ডাক্টরের দাবি, ‘‘উনি প্রতিবন্ধী। সকলেই ওঁর পক্ষে যাবে। তাই মিটিয়ে নিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy