ব্যাগপত্র-সহ কলকাতা স্টেশনে অভিবাসন কাউন্টারের সামনে একা দাঁড়িয়ে মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। পাসপোর্ট এবং পরিচয়পত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় কম্পিউটারে নথি যাচাই করে তাঁকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দিলেন অভিবাসন দফতরের অফিসারেরা। কলকাতা থেকে ঢাকা যাওয়ার সময়ের ঘটনা। এর উল্টো ছবিও অবশ্য রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ট্রেনে করে এসে কলকাতা স্টেশনে নেমে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মহিলা যাত্রী দাঁড়িয়ে অভিবাসন কাউন্টারের সামনে। তাঁর পাসপোর্ট এবং নথি কম্পিউটারের নথির সঙ্গে মিলিয়ে দেখতেই খটকা লাগে অফিসারদের। মহিলা এবং তাঁর মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অভিবাসন দফতরের অভিযোগ, ১৮ এবং ২৩ এপ্রিল ওই দু’টি ঘটনায় ধৃত তিন জনই আগে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে একাধিক বার এ দেশে এসেছেন। কিন্তু ঘটনার দিন তাঁরা ভারতীয় পাসপোর্ট দাখিল করেছিলেন অভিবাসন কাউন্টারে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে, ওই তিন জনের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে এ দেশে প্রবেশ, প্রতারণা, এবং পাসপোর্ট জালিয়াতির মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।
গত মার্চেও ওই স্টেশন থেকে বাংলাদেশ যাওয়ার সময়ে একই অভিযোগে আরও পাঁচ জনকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল অভিবাসন দফতর। তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্ত সকলেই বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে ২০১৪ সালের পরে এ রাজ্যে প্রবেশ করেন। এ দেশে আত্মীয়দের বাড়িতে বসবাস করার সময়ে এখানকার ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের মতো পরিচয়পত্র তৈরি করিয়ে নেন। তার ভিত্তিতে নাম অপরিবর্তিত রেখে, শুধু ঠিকানা বদলে পাসপোর্ট তৈরি করান। অভিবাসন দফতর নথি ঘেঁটে জানতে পারে, ওই নামের একই রকম দেখতে ব্যক্তি আগে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে ঢুকেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এমনই এক ব্যক্তি সুধীর বর্মণ। বাংলাদেশ যাবেন বলে তিনি ২৩ এপ্রিল কলকাতা স্টেশনে পৌঁছন। সঙ্গে ভারতীয় পাসপোর্ট। অভিবাসন অফিসারেরা নথি ঘেঁটে দেখেন, সুধীরবাবু ২০১৬ সালে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে বনগাঁ হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে এ রাজ্যে ঢোকেন। জেরায় সুধীরবাবু জানান, তিনি উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়ায় আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছিলেন। সেখানে মুদি দোকানও খুলেছেন। আদালতে বিচারক সুধীরবাবুকে এক দিনের পুলিশি হেফাজত দেন। বুধবার সুধীরবাবুর আত্মীয় ননীগোপাল মাল্য জানান, দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে যাতায়াত করছিলেন সুধীরবাবু।
১৮ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয়েছিল ডলি বর্মণ এবং তাঁর নাবালিকা মেয়েকে। ওই দুই বাংলাদেশি নাগরিক কলকাতার বাঁশদ্রোণী এলাকায় থাকছিলেন। সে দিন ডলিদেবী ঢাকায় মায়ের কাছে যাচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের দু’দেশেই আত্মীয় রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগই এখন আর বাংলাদেশে আর থাকতে চান না। তাই এ দেশে এসে দালালের মাধ্যমে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড তৈরি করে নিচ্ছেন। এক পুলিশকর্তা জানান, পাসপোর্ট-সহ ওই নথি তাঁরা কার মাধ্যমে জোগাড় করলেন খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy