আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কেষ্টপুর খালের ধারে পর্যাপ্ত আলো চেয়েছিল বাগুইআটি থানা। পুলিশকে ভাবনামুক্ত করতে বসানো হয়েছে এলইডি। কিন্তু, ত্রিফলা বসানো থেকে সরে এসেছে বিধাননগর পুর নিগম।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বৈশাখী থেকে কেষ্টপুর খালপাড় সংলগ্ন ফুটব্রিজ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত এক তরুণী।
মাঝপথে চার যুবক তাঁকে যৌন নিগ্রহের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ওই তরুণী ভয় পেয়ে আর এক জনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে অবশ্য চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রসঙ্গত, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত বহু তরুণ-তরুণী কেষ্টপুরে ভাড়া থাকেন। তাঁদের অনেকে ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা। এই অবস্থায় যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য বিধাননগর পুর নিগম কর্তৃপক্ষের কাছে ওই অঞ্চলে আলো বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠায় বিধাননগর সিটি পুলিশ।
সমর পল্লি, সিদ্ধার্থ নগর, কেষ্টপুর, বৈশাখী-সহ খালধারের দীর্ঘ পথে আলো নেই বললেই চলে। রাস্তাও খানাখন্দে ভরা। সল্টলেক এবং কেষ্টপুরের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আছে একাধিক ফুটব্রিজ। সেখান দিয়ে তরুণ-তরুণী ছাড়াও প্রবীণ মানুষজন যাতায়াত করেন।
বিধাননগর পুর নিগম সূত্রের খবর, গ্রিন সিটি প্রকল্পে কেষ্টপুর খালধারে প্রাথমিক ভাবে এলইডি এবং ত্রিফলা আলো লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ত্রিফলা লাগানোর পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
এক আধিকারিক জানান, খালধার সংশ্লিষ্ট রাস্তায় কোটি টাকার বেশি আলো লাগানো হলেও তাতে ত্রিফলা নেই। পুর নিগম সূত্রের খবর, সাড়ে সাত মিটার উঁচু ১২২টি এলইডি বাতিস্তম্ভ লাগানো হচ্ছে। ত্রিফলার জায়গা নিয়েছে ১২২টি পেলিকান আলো।
কেন বাদ গেল ত্রিফলা? এক পুরকর্তা জানান, একটি ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ লাগাতে খরচ ১৬ হাজার টাকা। সেখানে পেলিকান আলো লাগাতে খরচ সাড়ে ৯ হাজার। সাশ্রয় আড়াই লক্ষ টাকা। তাই পুর নিগমের তহবিলের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই কোটি টাকার আলোকসজ্জায় বাদ পড়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ।
এ দিকে কেষ্টপুর খালধারে আলো বসলেও ক্যান্টনমেন্ট খালপাড়ের অন্ধকার কবে দূর হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিম নারায়ণপুর, প্রফুল্ল কানন এবং দেশবন্ধুনগরের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই অঞ্চলে খালপাড়ের রাস্তায় ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের কাঠামোটুকু শুধু পড়ে আছে। কোথাও আলো জ্বলছে টিমটিম করে। কিছু বাতিস্তম্ভের একটি বা দু’টি ফলা ভেঙে গিয়েছে। ফলে আলোর যা জোর, তা অন্ধকার ঘোচানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। যাতায়াতের জন্য ভরসা বাড়ির বারান্দার আলো। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘রাতে লোক চলাচল কমে যায়। বিপদ হতে কত ক্ষণ?’’ বিধাননগর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘থানা এলাকার খালপাড়ে আরও আলোর প্রয়োজন অস্বীকার করছি না। আশা করি, কেষ্টপুর খালপাড়ের মতো জগৎপুর, ক্যান্টনমেন্ট খালধারেও আলো বাড়বে।’’
বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘কেষ্টপুর খালধারে আলো বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। সম্প্রতি সল্টলেক সংলগ্ন চারটি ওয়ার্ডে আলো বাড়ানোর কাজ দ্রুত শেষ করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। সেটি শেষ হলে ক্যান্টনমেন্ট খাল এবং জগৎপুর খালপাড়েও আলো দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy