তাঁকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, বিদেশে মোটা টাকা বেতনের চাকরি দেওয়া হবে। লিখিত চুক্তিও হয়। চাকরির আশায় বছর চারেক আগে একটি সংস্থাকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দিলেও চাকরি পাননি দমদমের বাসিন্দা কাঞ্চন পোদ্দার। টাকা ফেরত পেতে একাধিক বার সংস্থার অফিসে দরবার করেন কাঞ্চন। তাতেও কাজ না হওয়ায় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি। গত ১৭ মে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ‘প্রতারক’ ওই সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ২ লক্ষ টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, দমদমের বাসিন্দা কাঞ্চন কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামে ভবানীপুরের ওই সংস্থায় যোগাযোগ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘কানাডার এক সংস্থায় মোটা টাকা বেতনের চাকরির আশ্বাস দিয়ে আমার থেকে প্রথমে ৮৪,২৭০ টাকা নেওয়া হয়। লিখিত চুক্তিও হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, মাসখানেক পরে তাঁকে বলা হয়, চাকরি পেতে একটি পরীক্ষায় (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গোয়েজ টেস্টিং সিস্টেম) বসতে হবে এবং ৬.৫ ‘ব্যান্ড’ নম্বর পেলে তবেই তিনি মনোনীত হবেন। পরীক্ষার জন্য ফের নেওয়া হয় ১,৭৪,২২০ টাকা। কাঞ্চন আদালতকে জানিয়েছেন, ২০১৪-র ২২ নভেম্বর পরীক্ষায় আশানুরূপ নম্বর না পাওয়ায় তাঁকে সংস্থা দিয়ে জানায়, তিনি চাকরির জন্য মনোনীত হননি। কাঞ্চনের কথায়, ‘‘টাকা ফেরত পেতে বহু বার সংস্থার অফিসে যোগাযোগ করেছিলাম। লাভ হয়নি। লিখিত চুক্তিতে আমাকে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি জানানোই হয়নি!’’
প্রথমে কলকাতা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন কাঞ্চন। ২০১৬-র ৩১ মে আদালত বলে, ‘‘তরুণ-তরুণীদের লোভ দেখিয়ে মোটা টাকা হাতাচ্ছে এরা। এটা পুরোপুরি অসাধু ব্যবসা।’’ জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের তিন বিচারক অভিযুক্ত সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দিতে নির্দেশ দেন। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয় সংস্থাটি। ১৭ মে আদালত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কিছু কমিয়ে জেলা আদালতের রায় বহাল রাখে। নির্দেশ দেয়, ৪০ দিনের মধ্যে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে।
কাঞ্চনের অভিযোগ মেনে নিয়ে সংস্থার শাখা ম্যানেজার কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালতের রায় মেনে চলতে বাধ্য। ক্ষতিপূরণ-সহ পুরো টাকা শীঘ্রই ফেরত দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy