মশার বংশবৃদ্ধি রুখতে এ বার খোলা অবস্থায় নালা, চৌবাচ্চা এবং জলের ট্যাঙ্ক রাখতে দেবে না কলকাতা পুরসভা। কলকাতার কোথাও খোলা অবস্থায় জলের উৎস থাকলে স্থায়ী ভাবে তা ঢাকার ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাদের। এই মর্মে শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গাইডলাইন’ মেনে এ বার এই কাজে গুরুত্ব দিতে চায় পুর প্রশাসন। সম্প্রতি পুরসভা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সমীক্ষা করে দেখেছে, ৬০ ভাগ মশার আঁতুড়ঘরই হল খোলা ড্রেন, চৌবাচ্চা, কুয়ো এবং জলের ট্যাঙ্ক।
তবে পুরসভা যখন এই পদক্ষেপ করতে উদ্যোগী, তখন দেখা যাচ্ছে, বেহালায় খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডের বনমালী নস্কর রোডেই বহাল তবিয়তে রয়েছে খোলা নালা। সেখানে প্রতি বছরই মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হতে হয় এলাকাবাসীকে। পুরসভার সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মেয়রের বরো এলাকায় খোলা ড্রেনের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। সমীক্ষায় পুরসভার তথ্য বলছে, শহরের ৬০ ভাগ মশার আঁতুড়ঘর খোলা অবস্থায় থাকা নালা, চৌবাচ্চা এবং জলের ট্যাঙ্ক।
চলতি বছরে মশার ওই সব আঁতুড়ঘর ধ্বংস করাই তাঁদের প্রধান কর্মসূচি করতে চায় কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর।
কী ভাবে ওই কাজ করা হবে, তা নিয়ে পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শহরে প্রত্যেক কাউন্সিলরের সহায়তা চেয়ে ওই কাজে নামবে পুরসভার মশাবাহিত রোগ নিবারণী দল। আগামী সপ্তাহ থেকেই ওই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
অতীনবাবু জানিয়েছেন, মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ওই সব উৎস থেকেই। এ বার তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা করে সমীক্ষা করেছেন পুরসভার কর্মীরা। কোন ওয়ার্ডে কতগুলো খোলা নালা, জলাধার, কুয়ো বা ওভারহেড ট্যাঙ্ক রয়েছে, তার তালিকা বানানো হয়েছে। সেই তথ্য অনুসারে পুরসভার ১৬টি বরোতে ৫২ হাজার খোলা চৌবাচ্চা, ২১ হাজার খোলা ড্রেন, ২০ হাজার কুয়ো এবং চার হাজারেরও বেশি খোলা জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে। সেগুলো ধ্বংস করতে পারলে মশাবাহিত রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে বলে মনে করছেন পুরসভার পতঙ্গবিদেরা।
এর জন্য কী করা হচ্ছে?
মেয়র পারিষদ জানান, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়ে বলা হচ্ছে, নিজের নিজের এলাকায় খোলা নালা বন্ধ করায় উদ্যোগী হতে হবে। অবশ্যই সর্বদা ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে চৌবাচ্চা এবং ওভারহেড ট্যাঙ্ক।
পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় গিয়ে কাউন্সিলরদের পরামর্শে কাজ করবেন। যাঁদের বাড়িতে খোলা ড্রেন, চৌবাচ্চা, জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে, তাঁদের সর্বদা সজাগ করা হবে। এলাকায় পরিত্যক্ত কুয়ো বন্ধ করে দেওয়া হবে। আগামী দু’মাসের মধ্যে ওই কাজ সম্পন্ন করতে চায় পুরসভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy