শুক্রবারে ‘টক টু মেয়র’-এর অনুষ্ঠানে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন সেই কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরাই। ফাইল ছবি।
নিজের দায়িত্বাধীন দফতরের উপরে আবারও দোষ চাপালেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কারণ সেই ‘টক টু মেয়র’-এর অনুষ্ঠান। প্রসঙ্গটিও পুরনো, বার বার জানানো সত্ত্বেও অবৈধ নির্মাণ অব্যাহত থাকার নাগরিক-অভিযোগের প্রেক্ষাপট। শুক্রবারে ওই অনুষ্ঠানেও মেয়রের আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন সেই কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরাই।
এ দিনের অনুষ্ঠানে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে দু’টি জোরালো অভিযোগ করেন দুই নাগরিক। এক জনের অভিযোগ, হাই কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণ আজ পর্যন্ত ভাঙেনি পুরসভা। অন্য জনের অভিযোগ, আবাসনের চারতলায় বেআইনি নির্মাণ হওয়ায় তিনি পুরসভার থেকে ‘সিসি’ পাচ্ছেন না। এই দুই অভিযোগ শুনে ক্ষুব্ধ মেয়রের দাবি, ‘‘পুর ইঞ্জিনিয়ারের গাফিলতিতে প্রোমোটার নির্দ্বিধায় বেআইনি নির্মাণ করে ফেলছেন। আর এ সবের জন্য সাধারণ মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। অবৈধ নির্মাণে মদত দেওয়া ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি আগেই বলেছি। পুর কমিশনারকে পর্যন্ত জানানো হয়েছে।’’
এ দিন ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সন্দীপ বসু অভিযোগ করেন, তাঁদের একটি জমিতে প্রোমোটার বেআইনি নির্মাণ করেছিল। পুরসভাকে জানানো সত্ত্বেও তা ভাঙা হয়নি। পরে তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলে ওই নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু তা-ও পুরসভা সেটি ভাঙেনি। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক প্রবীণ নাগরিক এ দিন অভিযোগ করেন, তিনি যে আবাসনে থাকেন, সেখানে চারতলায় বেআইনি নির্মাণ হওয়ায় ফ্ল্যাটের ‘সিসি’ পাচ্ছেন না।
মেয়রের বক্তব্য, বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে পুরসভার বিল্ডিং দফতর ভূমিকা না নিলে সংশ্লিষ্ট দফতরের ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না। কলকাতা পুরসভার উচ্চ পদস্থ কর্তাদের একটি অংশের মত, মেয়রই বিল্ডিং দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন। তা সত্ত্বেও কেন তাঁর কথা শোনা হচ্ছে না বলে বার বার অভিযোগ করছেন মেয়র? তাঁদের প্রশ্ন, এর দু’টি অর্থ হতে পারে। এক, তাঁর হাতের রাশ আলগা হচ্ছে। দুই, তিনি নিজেই দায়িত্ব সামলানোর ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলতে দোষ চাপাচ্ছেন অধস্তনদের উপরে।
আর মেয়র বলছেন, ‘‘৩৪ বছর ধরে ব্যাঙের ছাতার মতো বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। মেয়র হয়ে এসে বাড়ির নকশা অনুমোদনের জন্য পুর আইনের সরলীকরণ করেছি। কিন্তু এক শ্রেণির ইঞ্জিনিয়ার, এলবিএস-এর চক্রে এখনও মানুষ সহজে বাড়ি তৈরির অনুমোদন পান না।’’
পুরসভার অন্দরে ঘুরছে আরও প্রশ্ন, শুধু পুর ইঞ্জিনিয়ারদের উপরে দোষ কেন? স্থানীয় কাউন্সিলরদেরও তো মদত থাকে! মেয়রের অবশ্য জবাব, ‘‘কাউন্সিলর নকশা অনুমোদনের কিছু জানেন না। এটি পুর আধিকারিকেরাই জানেন। কাউন্সিলর-রাজনীতিকেরা সহজ শিকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy