দখল: স্তুপাকৃতি করে রাখা পাথরকুচি। তারই পাশ কাটিয়ে পথ চলা। বারাসতের কালিকাপুরে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
বারাসত অঞ্চলের ব্যস্ততম রাস্তা এটি। সারা দিন বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে বাস, লরি-সহ বিভিন্ন যানবাহন। সেই রাস্তা, বারাসত-গোলাবাড়ি রোডের দু’পাশে জুড়ে ছড়িয়ে থাকে বালি, পাথরকুচির মতো নির্মাণ সামগ্রী। কার্যত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় পথচারীদের। সতর্ক হয়ে চলতে হয় বাইক এবং সাইকেল আরোহীদেরও। বালিতে চাকা পিছলে বাইক-আরোহীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে অতীতে। অভিযোগ, তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। পুরবাসীরা জানাচ্ছেন, অনেকগুলি ওয়ার্ডের মাঝখান দিয়ে গিয়েছে বারাসত-গোলাবাড়ি রোড। গোটা রাস্তায় বড় বড় গর্ত। দীর্ঘদিন ধরেই এমন অবস্থা। তার সঙ্গে এ বার যুক্ত হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকার সমস্যা। অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিদের বার বার বলা সত্ত্বেও না ঠিক হয়েছে রাস্তা, না বন্ধ হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকা।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি বারাসতে পুরভোট। তার আগে এক দুপুরে স্থানীয় সরোজ পার্ক এলাকায় গিয়ে এই রাস্তা ধরে যেতে যেতে দেখা গেল, বেশ কিছু জায়গায় স্তূপাকৃতি হয়ে রয়েছে বালি। সরোজ পার্ক এলাকাটি ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। একই অভিযোগ শোনা গেল ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুবর্ণপত্তন কিংবা বামুনমুড়া এলাকা থেকে। স্থানীয় দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, রাস্তার এক দিক আটকে থাকায় প্রাতর্ভ্রমণকারী এবং সাইকেল আরোহীরা বাধ্য হন মাঝখান দিয়ে যেতে। পিছনের গাড়ি হর্ন বাজানো সত্ত্বেও তাঁদের ধারে সরে আসার উপায় থাকে না।
কাজিপাড়া এলাকার লোকজন জানালেন, বছর দুই আগে বারাসত-গোলাবাড়ি রোডের ধারে পড়ে থাকা বালিতে মোটরবাইকের চাকা পিছলে যাওয়ায় লরিতে পিষ্ট হয়েছিলেন দুই বাইক-আরোহী। তার পরে কিছু দিন কড়াকড়ি দেখা গিয়েছিল পুরসভা ও পুলিশের তরফে। এখন আবার ফিরে এসেছে আগের ছবি। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণ সামগ্রী সরানো নিয়ে পুরসভা ও পুলিশ-প্রশাসনের দায় ঠেলাঠেলি চলে। আখেরে কাজ কিছু হয় না। যদিও বারাসত পুলিশ জেলার এক পদস্থ কর্তার দাবি, ‘‘দরকার না হলে পুলিশ এলাকার ভিতরে ঢোকে না। বড় রাস্তাতেই টহল দেয়। সেখানে ইমারতি দ্রব্য পড়ে থাকতে দেখলে সেগুলি সরানোর কথা ঘোষণা করে। কাজ না হলে নিজেরাই সরিয়ে দেয়। কিন্তু পুর প্রতিনিধিদের উচিত, ওই জায়গায় আর যাতে ইমারতি দ্রব্য ফেলা না হয়, সে দিকে লক্ষ রাখা।’’
যার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্রের কটাক্ষ, ‘‘শাসক দলের নেতা-নেত্রীরা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। তাই রাস্তার ধারে এ ভাবে নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। ফল ভুগছেন সাধারণ মানুষ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সম্ভব হলে প্রশাসন নিরপেক্ষ ভাবে ব্যবস্থা নিক।’’ কার্যত একই সুরে বারাসতে সিপিএমের ভোট-পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক দেবব্রত বসু বলেন, ‘‘আমরা আগে এই সমস্যা নিয়ে একাধিক বার সরব হয়েছি। প্রোমোটারেরা কাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেন, তা বলে দিতে হয় না। মাঝে সমস্যা কিছুটা ঠিক হয়েছিল। আবার ফিরে এসেছে।’’
বারাসত সংসদীয় জেলার তৃণমূলের সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায়ের যদিও দাবি, ইমারতি দ্রব্য পড়ে থাকার সমস্যা আগের চেয়ে কম। অশনি এ বার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীও। তিনি বলেন, ‘‘পুর প্রতিনিধিরা সক্রিয় না হলে ওই রাস্তার সর্বত্রই ইমারতি দ্রব্য পড়ে থাকতে দেখা যেত। তা তো হয়নি। আগেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, ভবিষ্যতেও নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy