Advertisement
E-Paper

বিনোদন কর আদায় লাইসেন্স বাতিল করার পুর হুঁশিয়ারি

হাল এমনই যে, লকডাউনের পরের কয়েক মাস পুরকর্মীদের বেতন এসেছে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে। বর্তমানে পুরসভার কর্মী-সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০৯
Share
Save

কোষাগারের হাল ফেরাতে ওয়েভার স্কিম চালু করার পরে এ বার বিনোদন কর আদায়ের সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ এ বিষয়ে বলেন, ‘‘শহরের বিভিন্ন হোটেল, পানশালা ও বিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে খুব শীঘ্রই বিনোদন কর আদায়ের কাজ শুরু হবে। নির্দিষ্ট সময়ে বিনোদন কর দিতে না পারলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’’

যদিও বিনোদন কর বকেয়া থাকলে শাস্তি হিসেবে লাইসেন্স বাতিলের এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে রাজি নন ‘হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন’-এর পূর্ব ভারতের প্রতিনিধিরা। ওই সংগঠনের তরফে অশোক সিংহ বলেন, ‘‘বছর দশেক আগে কলকাতা পুরসভা আমাদের থেকে বিনোদন কর আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে বার আমরা পুরসভার ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলাম। আদালত কর আদায়ে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। এ বারও আমরা একই পথে হাঁটব।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সময়মতো বিনোদন কর দিতে না পারলে যদি লাইসেন্স বাতিল করা হয়, তা হলে সেটা এক ধরনের স্বৈরাচার। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ ওই অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ব ভারতের এক কর্তা সুদেশ পোদ্দার পুরসভার এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে ব্যবসায়ীদের অনেকেই খুব দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় বিনোদন কর দিতে না-পারলে লাইসেন্স বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা অমানবিক।’’

এ দিকে, পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের কোষাগারের অবস্থা খুবই সঙ্গিন। হাল এমনই যে, লকডাউনের পরের কয়েক মাস পুরকর্মীদের বেতন এসেছে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে। বর্তমানে পুরসভার কর্মী-সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। পেনশনভোগীর সংখ্যা ৩১ হাজার মতো। বেতন বাবদ মাসে পুরসভার খরচ হয় ৮৪ কোটি টাকা। আবার পেনশন বাবদ খরচ হয় প্রায় ৫৬ কোটি টাকা। সূত্রের খবর, কর্মীদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্তদের পেনশনের টাকা দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে পুরসভাকে।

সেই কারণেই দ্রুত টাকা তুলতে গত অক্টোবর থেকে ওয়েভার স্কিম (সম্পত্তিকরের উপরে সুদ ও জরিমানার উপরে একশো শতাংশ ছাড়) চালু করেছিল পুরসভা। প্রাথমিক ভাবে গত ৩১ ডিসেম্বর

ছিল ওই স্কিমে টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। কিন্তু দেখা যায়, মোট বকেয়া সম্পত্তিকরের পরিমাণ তিন হাজার কোটির বেশি হলেও ওয়েভারে জমা পড়েছে মাত্র ১৫০ কোটি টাকা। আশানুরূপ কর আদায় না হওয়ায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

পুরসভার নথি বলছে, কলকাতা শহরে প্রায় ৫০০টি হোটেল ও হাজার দুয়েক অতিথিশালা রয়েছে। পানশালার সংখ্যা হাজার দশেক। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘পুর আইন অনুযায়ী শহরের হোটেল, পানশালা ও অতিথিশালা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠানের বিনোদন কর দেওয়ার কথা। পুরসভা ওই সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধরে ধরে বিনোদন কর আদায়ের কাজ শীঘ্রই শুরু করবে।’’

অতীনবাবু জানিয়েছেন, কলকাতা পুর এলাকার বিভিন্ন বিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ বিনোদন কর বকেয়া রেখে দিয়েছে, তার পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। শহরের হোটেল, রেস্তরাঁ ও পানশালাগুলির মালিকেরা আবার বলছেন, ‘‘আমরা ব্যবসা চালানোর জন্য পুরসভাকে লাইসেন্স ফি দিই। তা হলে সেই লাইসেন্স কোন অধিকারে বাতিল করবে পুরসভা? হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সাফ কথা, ‘‘লকডাউনে আমরা বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় বিনোদন কর দেওয়া মুশকিল।’’

KMC Entertainment Tax

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}