প্রতীকী ছবি।
আজিজুল পুরকায়েত। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক।
দেবপ্রসাদ পাল। বেথুন কলেজের গণিতের শিক্ষক।
ধনঞ্জয় কুম্ভকার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র।
এই তিন জনের মধ্যে মিল হল— তাঁরা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তিন জনই এমন হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেছেন যেখানে থাকা–খাওয়ার খরচ লাগে না। এমনকি, রোজকার যাতায়াতের খরচ-সহ হাতখরচও দেওয়া হয়। সল্টলেকে করুণাময়ীর কাছে রয়েছে এই ছাত্রাবাস।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার আজিজুল ২০০৬ সালে ডাক্তারি পড়তে ভর্তি হয়েছিলেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রিকশাচালক বাবার ছেলেকে কলকাতায় রেখে পড়ানোর মতো সামর্থ্য ছিল না। আজিজুল জানালেন, তখন তিনি এই হস্টেলের খোঁজ পান। পড়ার পুরো সময়টাই নিখরচায় সেখানে থেকেছেন তিনি। দেবপ্রসাদ ২০১২ সালে এই হস্টেলে থাকতে আসেন। জানালেন, তখন তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কৃষকের ছেলে দেবপ্রসাদ বীরভূম থেকে এই হস্টেলে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এই হস্টেলে থাকার ফলে ভালভাবে পড়াশোনা করতে পেরেছি। আর্থিক চাপ নিতে হয়নি।’’ ধনঞ্জয় ২০১৭ সাল থেকে রয়েছেন এই হস্টেলে। বাঁকুড়ার লায়েকবাঁধের ছেলে ধনঞ্জয়ের বাবার তেলেভাজার দোকান। ধনঞ্জয় জানালেন, এই হস্টেলে থাকার সুযোগ পেয়ে নিজের পড়াশোনা চালাতে পেরেছেন।
এই হস্টেলের কথা শুনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি বিভাগের ডিন অম্লান চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘গ্রামের পড়ুয়ারা এমন থাকার সুযোগ পেলে খুবই ভাল।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায় জানালেন, দূর থেকে পড়তে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়েও অনেক পড়ুয়া আসেন। স্থানাভাবে সকলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে জায়গা দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘‘এমন হস্টেল আরও হলে অভাবী পড়ুয়াদের সত্যি সুবিধা হবে।’’
এই হস্টেল চালায় একটি অছি পরিষদ। অছি পরিষদের অন্যতম সদস্য সুরজিৎ রায় জানালেন, ২০০৩ থেকে তাঁরা এই কাজ শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২৫ জন মেধাবী পড়ুয়াকে তাঁরা এই হস্টেলে রাখতে পেরেছেন। পুজোয় নতুন জামা-কাপড় দেওয়ার রীতিও তাঁদের রয়েছে। পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও এখন প্রতিষ্ঠিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy