বসু বিজ্ঞান মন্দিরের গবেষণাগার। সুমন বল্লভের তোলা ছবি।
মানিকতলার বসু বিজ্ঞান মন্দিরের ক্যাম্পাসে চার তলার তিনটি ল্যাবরেটরিতে কাজ করছিলেন কয়েক জন ছাত্র। কাজ করতে করতে হঠাৎই তাঁরা লক্ষ্য করেন, ক্যানসার গবেষণার একটি ঘরের পাইপ থেকে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে চার পাশ। সঙ্গে সঙ্গে গবেষণাগারগুলি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন সকলে। খবর দেওয়া হয় নিরাপত্তারক্ষীকে। এরই মধ্যে ধোঁয়ায় অনেকে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। মিনিট দশেকের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। পরে পৌঁছয় আরও দুটি ইঞ্জিন। ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
কী ঘটেছিল?
দমকল সূত্রে খবর, রবিবার সকালে ১১ টা ১০ মিনিট নাগাদ মানিকতলার বসু বিজ্ঞান মন্দির থেকে ফোন আসে তাদের দফতরে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, ওই এলাকার তিনটি ভবনের একটির চার তলায় লেগেছে আগুন। তারা পাইপ নিয়ে পৌঁছে যান চারতলার ওই বিভাগে। প্রথমে ক্যানসার গবেষণার ওই ল্যাবরেটরিতে ঢুকে জল দিতে শুরু করেন তাঁরা। পরে জল ছেটাতে শুরু করেন পাশের প্রোটিন রসায়নের ল্যাবরেটরিগুলিতেও।
এর মধ্যেই হাঁ হাঁ করে ওঠেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা। তত ক্ষণে চলে এসেছেন বেশ কয়েকজন অধ্যাপকও। দমকল ওই ভাবে নির্বিবাদে জল ছেটালে ল্যাবরেটরিতে থাকা দামী যন্ত্রপাতি এবং বহুমূল্য রাসায়নিকের ক্ষতি হতে পারে-এই যুক্তি দেখিয়ে দমকলকর্মীদের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসায় জড়িয়ে পড়েন পড়ুয়া-অধ্যাপকরা। যদিও অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা প্রয়োজনের খাতিরে দমকলের কাজকর্ম মেনে নিতে বাধ্য হন। দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এর পরেই ওই ল্যাবরেটরিগুলির ফলস্ সিলিং ভাঙতে শুরু করে দমকল। দুপুর আড়াইটে নাগাদ কোণের দিকের একটি ল্যাবরেটরিতে আগুন লাগার উৎস খুঁজে পাওয়া যায়। দমকল জানিয়েছে, ওই ঘরের একটি স্প্লিট এসি থেকে শর্ট সার্কিটের কারণে লেগেছে আগুন। আগুনে গলে গিয়েছে ওই ঘরে থাকা কম্পিউটার। ক্ষতি হয়েছে যন্ত্রপাতিরও। সেন্ট্রাল ল্যাব ফ্যাসিলিটি ইনচার্জ সুজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এই ঘরের শীতাতপ যন্ত্রটিতে টাইমার দেওয়া রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ের পর সেটি কি ভাবে চলছিল, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’
স্বস্তিতে ছাত্রছাত্রীরাও। তাদেরই একজন প়ঞ্চম বর্ষের ছাত্র বরুণ মাহাতো বলেন, ‘‘রবিবার সকালে শিক্ষকরা সাধারণত থাকেন না। আমরা নিজেরাই ব্যক্তিগত ভাবে প্র্যাকটিস করছিলাম। এত রাসায়নিক আর যন্ত্রপাতির মাধ্যমে হঠাৎ কোনও বিস্ফোরণ হলে বিপদ ঘটতে পারত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy