ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল ছবি।
পুজোর আগে শেষ বার আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বসবে কলকাতা পুরসভার অধিবেশন। সেই অধিবেশনের দিনেই কলকাতা পুরসভা ভবনের তালা ঝোলানোর হুমকি দিয়েছে বামপন্থী সংগঠন কেএমসি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড অ্যালায়েড সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন৷ সেই হুমকির পাল্টা জবাব দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের শেষে এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে কার্যত পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গত মার্চ মাসে গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ে ১৩ জন মানুষ মারা যান। সেই ঘটনায় তিন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করেছে পুরসভা। সেই ইঞ্জিনিয়ারদের ফিরিয়ে আনতেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওই সংগঠনটি।
ফিরহাদ বলেন, ‘‘বাম সংগঠনকে আচমকাই কেউ জেগে ওঠার ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ করে ওরা লাফালাফি শুরু করে দিয়েছে। এক এক জায়গায় ১৩-১৪ বছর ধরে মৌরসিপাট্টা চলছিল, এত দিন কোনও মেয়র ওদের মৌরসিপাট্টা ভাঙেননি। অনেক দিন ধরে যাঁরা এক জায়গায় কাজ করছিলেন, তাঁদের বদলি করে দেওয়া হয়েছে। বিভাগ ভিত্তিক সব বদলি করা হয়েছে। তাই রাগের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে।’’ এই অভিযোগের ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হচ্ছে পদোন্নতি। পদোন্নতির ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে ৬০ শতাংশ বর্তমান কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে পদন্নোতি দেওয়া হবে। আর ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে সরাসরি আধিকারিক স্তরে নিয়োগ হবে। এই নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বাম সংগঠনটি।
সংগঠনের নেতা মানস সিংহ বলেন, ‘‘গার্ডেনরিচের ঘটনার পরে বিল্ডিং বিভাগের এক জন এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, এক জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে৷ পুজোর মুখে এখনও তাঁদের সাসপেনশন তোলা হয়নি৷ প্রায় ছয় মাস গড়িয়ে যাচ্ছে ওই ঘটনার৷ কী তদন্ত হয়েছে? যে সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলার কথা ছিল, তার রিপোর্ট কী হয়েছে, প্রকাশ্যে আনতে হবে ৷ কারা প্রকৃত দোষী, তা জানাতে হবে ৷ পুলিশের তদন্তই বা কী হল? যদি, বিল্ডিং বিভাগের এই তিন ইঞ্জিনিয়ার দোষী হতেন, তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিল্ডিং বিভাগেই অস্থায়ী ভাবে ডিজির দায়িত্ব সামলানো ব্যক্তিকে এবারে স্থায়ী পদে দায়িত্ব দেওয়া হল৷ এটা আমাদের আরজি করের ঘটনাকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে৷ বিল্ডিং বিভাগের যে দুর্নীতির সিন্ডিকেট র্যাকেট চলছে, তার দায় এই ডিজি এড়িয়ে যেতে পারেন না৷ তা হলে কী করে তাঁর পদোন্নতি হল? তাঁকে তো এই ঘটনায় সরিয়ে দেওয়া দরকার ছিল৷ দুর্নীতিচক্র কলকাতা পুরসভায় লাগামহীন হয়ে পড়েছে৷ বেআইনি নির্মাণে মদত দিয়ে কোটি টাকা রোজগার করছে সিন্ডিকেটের লোকজন৷ তাই এই ঘটনার বিচার চেয়ে এবার আমরা মাসিক অধিবেশনের দিন কলকাতা পুরসভার মূল ভবনের সব ক’টি গেটে তালা মেরে দেব৷’’ পুরসভার এক অধিকারিক জানিয়েছেন, যে, ওই ইঞ্জিনিয়াদের সাসপেনশন তোলা হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন পুরসভা শীর্ষকর্তারা। তাই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা হবে না। তবে পুর অধিবেশনে বাধা দিতে এলে যে তাঁরা ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবেন, তা-ও অন্তরালে বলছেন আধিকারিকরা। কারণ মেয়র বুঝিয়ে দিয়েছেন, পুর অধিবেশনে গোলমাল তিনি বরদাস্ত করবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy