বিকল: ক’দিন আগেই খারাপ হয়েছিল একটি চলমান সিঁড়ি। সেটি সারাই হওয়ার কিছু দিন পরে ফের বিগড়েছে আরও একটি সিঁড়ি। যাত্রী-দুর্ভোগ চলছেই। শুক্রবার চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
দেখতে দেখতে পাঁচ মাস অতিক্রান্ত। দমদম মেট্রো স্টেশনের বেলগাছিয়ার দিকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চলমান সিঁড়িটি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু সেটি সারানোর কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি মেট্রোর তরফে। চলমান ওই সিঁড়িটি খোলা অবস্থায় গত
পাঁচ মাস ধরে সেখানেই পড়ে রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই পাশের সিঁড়ি দিয়ে পায়ে হেঁটে কোনও মতে যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে উঠছেন।
হেঁটে উঠতে গিয়ে সব থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে বয়স্ক যাত্রীদের। ১০০টি সিঁড়ি ভেঙে উঠতে গিয়ে অনেকেই মাঝপথে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। কিন্তু বারবার বলা সত্ত্বেও মেট্রো কতৃর্পক্ষের কোনও হেলদোল নেই। অথচ দমদম স্টেশন দিয়েই মেট্রোর ২৫ শতাংশ যাত্রী যাওয়া-আসা করেন। এই চলমান সিঁড়িটি খারাপ হয়ে থাকায় বেলগাছিয়ার দিক দিয়ে যাতায়াত করা অনেক যাত্রীই এখন পিছনের দিক দিয়ে বা মাঝের গেট দিয়ে যাওয়া-আসা শুরু করেছেন। তাতে পিছনের দিকে এবং মাঝের কাউন্টারে অফিসের ব্যস্ত সময়ে ভিড় জমছে বেশি। অনেক সময়েই মেট্রোর টোকেন ফুরিয়ে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
দীর্ঘ দিন ধরে সিঁড়িটি এই ভাবে অকেজো হয়ে থাকা সত্ত্বেও সেটিকে সারানোর কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় মেট্রো কতৃর্পক্ষের কর্মসংস্কৃতিকেই দূষছেন যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, মেট্রো কর্তারা যাত্রী পরিষেবা নিয়ে বিন্দুমাত্র সচেতন নন। তাঁরা বয়স্কদের কষ্ট হওয়ার বিষয়টিতে আলাদা করে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। নইলে এত দিনে সিঁড়িটি চালু করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হতো নিশ্চয়।
যাত্রীদের এই বক্তব্য যে অমূলক নয়, তা এ দিন মেট্রোর চিফ ইঞ্জিনিয়ার পুরুষোত্তম সিংহের সঙ্গে কথা বলেই বোঝা গিয়েছে। সিঁড়ি মেরামতের বিষয়টি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘‘ঠিক আছে, আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারকে বলব কাজটা তাড়াতাড়ি করতে।’’
তা হলে এত দিন এই কাজ ফেলে রাখা হলো কেন? এ ব্যাপারে তাঁর জবাব, ‘‘সিঁড়িটির কয়েকটি যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে গিয়েছে। যে সংস্থা এই সিঁড়িটি তৈরি করেছে, তাদের কাছে যন্ত্রাংশ পাওয়া যাচ্ছে না। তার ফলেই এই দেরি।’’
চিফ ইঞ্জিনিয়ারের এই উত্তর শুনে যাত্রীরা বলছেন, সদিচ্ছা থাকলে অন্য সংস্থা থেকেও তো যন্ত্রাংশগুলি কিনে সিঁড়িটি মেরামত করা যেত। আসলে কেউই বিষয়টি নিয়ে ভাবিত নন। তাতেই এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
যদিও মেট্রোর আর একটি সূত্রের খবর, ওই সিঁড়িটির তলায় সিমেন্টের বাক্সের মধ্যে জল জমে যাচ্ছে। ওই জল ঢোকা বন্ধ করতে না-পারার
জন্যই সিঁড়িটি সারানো সম্ভব হচ্ছে না। এই চলমান সিঁড়িগুলি মেট্রোর শুরুর সময় থেকে ছিল না। গত দশ-বারো বছরে সেগুলি বিভিন্ন স্টেশনে বসানো হয়। এই সিঁড়িগুলি অনেক মজবুত হওয়ার কথা। বেশির ভাগ চলমান সিঁড়ি গড়ে সাত-আট বছরের পুরনো। সেগুলি এত তাড়াতাড়ি নষ্ট হওয়ার কথা নয়। কেন সিঁড়িগুলি তাড়াতাড়ি বিকল হয়ে যাচ্ছে, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা দরকার বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy