Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Dengue

ডেঙ্গি ঠেকাতে এ বার মামলায় জোর পুরসভার

বছরখানেক আগে চারু মার্কেট থানা এলাকার টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোয় ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার প্রচুর লার্ভা মিলেছিল।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৯
Share: Save:

নজরদারির অভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে শহরের বিভিন্ন সরকারি ভবনে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, গত দু’বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতার বিভিন্ন সরকারি আবাসন, পুলিশ আবাসন, বন্ধ থাকা একাধিক ট্রাম ডিপো বর্তমানে মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। তাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ডেঙ্গি ঠেকাতে এ বার শহরের বিভিন্ন সরকারি আবাসন, ট্রাম ডিপো, অফিস চত্বরে মশার লার্ভা মিললে আর শুধু সতর্কীকরণ নয়, বরং সরাসরি মামলা করে জরিমানা আদায়ের পথে হাঁটছে পুর স্বাস্থ্য দফতর।

বছরখানেক আগে চারু মার্কেট থানা এলাকার টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোয় ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার প্রচুর লার্ভা মিলেছিল। পুরসভার তরফে পরিবহণ দফতরের কাছে এ নিয়ে নোটিস পাঠানো হলেও কাজের কাজ হয়নি। এর পরে পুরসভা মিউনিসিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা করে। মাস দুয়েক আগে আদালতের নির্দেশ মেনে পরিবহণ দফতর পুরসভার কাছে জরিমানা বাবদ ৬০ হাজার টাকা জমা করেছে। একই ভাবে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ঠিকানায় পশ্চিমবঙ্গ সঙ্গীত অ্যাকাডেমির বিরুদ্ধে মিউনিসিপ্যাল কোর্টে মামলা করেছিল পুরসভা। গত এপ্রিলে তাদের থেকে জরিমানা বাবদ আদায় হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। গত এপ্রিলেই খিদিরপুরের ভূকৈলাস রোডের অবৈধ খাটাল থেকে প্রচুর মশা ছড়িয়ে পড়ায় খাটালের মালিকদের বিরুদ্ধেও মিউনিসিপ্যাল কোর্টে মামলা রুজু করা হয়। সেই মামলা থেকেও পুরসভা এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা বাবদ আদায় করেছে।

কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘ডেঙ্গি ঠেকাতে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। পুরসভার একার পক্ষে ডেঙ্গি আটকানো অসম্ভব। সচেতন করেও কাজ না হওয়ায় তাই আমরা বাধ্য হয়ে নোটিস পাঠিয়ে মিউনিসিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলার পথে যাচ্ছি। তার সুফলও মিলছে।’’

পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মশার সম্ভাব্য আঁতুড়ঘর সম্পর্কে নাগরিকদের সতর্ক করেও কাজ না হলে পুর আইনের ৪৯৬ (এ) ধারায় নোটিস পাঠানো হচ্ছে। ওই নোটিসে জল জমানো এড়াতে সংশ্লিষ্ট নাগরিককে সতর্ক করা হয়। তবে, সেই নোটিসেও কাজ না হলে আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে মিউনিসিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা রুজু করছে পুর স্বাস্থ্য
দফতর। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০২৩ সালে পাঠানো নোটিসের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এ বার জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত সেখানে ছ’হাজার নোটিস পাঠানো হয়েছে। পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০২২ সালে কলকাতা পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের করিম বক্সী লেনে একটি সরকারি আবাসনের ছাদে জলাধারের ঢাকনা খোলা থাকায় সেখানে এডিস ইজিপ্টাইয়ের প্রচুর লার্ভা মিলেছিল। ওই আবাসনে একাধিক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্তও হন। পুরসভার তরফে আবাসন দফতরের বিরুদ্ধে মিউনিসিপ্যাল কোর্টে মামলা করে মোটা জরিমানা আদায় হয়েছিল।

সরকারি আবাসনগুলিতে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে থাকায় গত বছর ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে চিঠি লিখে সতর্ক করেন। পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত বছরের নিরিখে এখনও পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ শতাংশ কম। তবু সতর্ক রয়েছি। ডেঙ্গি রুখতে এপ্রিল থেকে বরোভিত্তিক পুরপ্রতিনিধি, আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য)। মানুষের কাছে একটাই আবেদন, বাড়ি বা তার আশপাশে একেবারেই জল জমতে দেবেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE