গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বৌবাজারের হস্টেলে যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল। ১০ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে। তবে ধৃতদের মধ্যে যাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন, তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন বলেও জানিয়েছে আদালত।
বৌবাজারকাণ্ডে ধৃতদের গ্রেফতারির পর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মেয়াদ শেষ হলে বৃহস্পতিবার তাঁদের আবার আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশের তরফে আইনজীবী আদালতে জানান, ঘটনার দিন হস্টেলের ভিতরে যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও দরজা খোলা হয়নি। আইনজীবী জানিয়েছেন, যুবক যাতে পুলিশের সামনে মুখ না খুলতে পারেন, সেই বন্দোবস্ত করেছিলেন অভিযুক্তেরা। যত ক্ষণ না তিনি কথা বলার ক্ষমতা হারাচ্ছেন, তত ক্ষণ মারধর চালিয়ে যাওয়া হয়। তিনি কথা বলতে পারবেন না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর খুলে দেওয়া হয় হস্টেলের দরজা। তার পর পুলিশ ভিতরে ঢোকে।
বৌবাজারের সেই হস্টেলে গিয়েছিল ফরেন্সিক দলও। আদালতে বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে, হস্টেলের মেঝে থেকে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। পুলিশের বক্তব্য, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরাই যুবককে মারধর করেছিলেন। সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিলেন, যাঁরা এখনও পলাতক। সকলেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। পুলিশের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘সে দিন কী ঘটেছিল, তার ডিজিটাল প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এঁরা না করলে কে করেছে এই কাজ? এটা তো কোনও ভূতুড়ে ঘটনা নয়!’’ ১২ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের হেফাজতে চেয়েছে পুলিশ।
অন্য দিকে, অভিযুক্তদের আইনজীবী জানান, ধৃতেরা সকলে পড়ুয়া এবং মেধাবী ছাত্র। কেউ কেউ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। এঁরা কেউ মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। আদালতে মামলা চলাকালীন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেন কয়েক জন অভিযুক্ত। আদালত তাঁদের সেই অনুমতি দিয়েছে। এক অভিযুক্ত জানান, ঘটনার দিন তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। কী হয়েছে, কিছুই জানতেন না। ঘুম ভেঙে যাওয়ায় খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। তিনি এই ঘটনায় যুক্ত নন বলে দাবি করেছেন। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত ধৃতদের সকলকে ১০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে থাকতে বলেছে।
বৌবাজারের হস্টেলে ইরশাদ আলম নামের ৩৭ বছরের যুবককে মোবাইল চুরির সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। যুবক বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। চাঁদনি চকের দোকানে কাজ করতেন। অভিযোগ, ঘটনার আগের দিন ওই হস্টেলের এক জনের মোবাইল হারিয়ে গিয়েছিল। পরের দিন সকাল থেকে যুবককে হস্টেলের সামনে ঘুরঘুর করতে দেখে সন্দেহ হয় আবাসিকদের। তার পরেই তাঁকে ফুটপাথ থেকে টেনেহিঁচড়ে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভিতরে মারধর করা হয় তাঁকে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। হাসপাতালে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে মুচিপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতেরা সকলে হস্টেলের আবাসিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy