Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
SSKM

করোনা পরীক্ষা হয়নি, দগ্ধ শিশুকে ভর্তি নিতে দেরি পিজিতে

তবে এসএসকেএম হাসপাতালের তরফে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘করোনা পরীক্ষা করা আবশ্যিক।

এসএসকেএমে সেই শিশুটি। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

এসএসকেএমে সেই শিশুটি। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:০৮
Share: Save:

করোনা পরীক্ষা না হওয়ায় এক বছরের অগ্নিদগ্ধ একটি শিশুকে ভর্তি না নিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা অপেক্ষা করানোর অভিযোগ উঠল এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ভর্তি না নেওয়ায় রাতভর কার্যত বিনা চিকিৎসায় হাসপাতাল চত্বরে পড়ে ছিল অগ্নিদগ্ধ ওই শিশুটি। এমনকি, জরুরি বিভাগে দেখানোর পরে তার চিকিৎসা হয়নি বলেও হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন শিশুটির অভিভাবকেরা।

তবে এসএসকেএম হাসপাতালের তরফে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘করোনা পরীক্ষা করা আবশ্যিক। তবে রাত থেকে ওই শিশুর সব রকম প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরে শিশুটিকে বার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ এ নিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। শিশুটিকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখন তার শারীরিক অবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে স্থিতিশীল।’’

হাসপাতাল এবং পরিবার সূত্রের খবর, বেহালার বাসিন্দা, সোনিয়া ঘোষদস্তিদার নামে ওই শিশুটি বুধবার সন্ধ্যায় রান্নাঘরে খেলা করতে করতে আচমকা গ্যাসে বসানো গরম জলে হাত দিয়ে ফেলে। সেই গরম জল ছিটকে এসে পড়ে তার মুখে। তার শরীরের প্রায় ১৮ শতাংশ পুড়ে যায়। এমন অবস্থায় প্রথমে তাকে বেহালা বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যান তার মা চৈতালি ঘোষদস্তিদার। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয় শিশুটিকে। অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ শিশুটিকে নিয়ে তার অভিভাবকেরা এসএসকেএমে পৌঁছলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা প্রথমেই জানতে চান, শিশুটির করোনা পরীক্ষা হয়েছে কি না। ওই পরীক্ষা করানো হয়নি এ কথা জানার পরেই শিশুটিকে অ্যানেক্স বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আরও খবর: সল্টলেকে বাড়ির ছাদে কঙ্কাল, ছেলেকে খুনের অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে

চৈতালির অভিযোগ, ‘‘সেখানে তেমন কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। ভোর পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক এসে ওকে দেখে পর্যন্ত যাননি। সারা রাত মেয়েটা চিৎকার করে কেঁদেছে। মেয়েকে কোলে নিয়ে সারা রাত বসেছিলাম। গভীর রাতে কয়েক জন নার্স ওকে স্যালাইন দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু যন্ত্রণায় মেয়েটা ছটফট করছিল। মুখের পোড়া অংশে হাতে লাগানো যাচ্ছিল না। বড় সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। কান্না থামাতে ওকে নিয়ে রাস্তায় এসে পায়চারি করেছি। কিন্তু কান্না থামাতে পারিনি।’’

আরও খবর: বাংলায় নৈরাজ্য চললেও রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি নয়: নড্ডা

সারা রাত এ ভাবে কাটার পরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই শিশুর করোনা পরীক্ষা করা হয়। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেই বার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি নেওয়া হয় শিশুটিকে। তবে সেখানেও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন চৈতালি। তাঁর কথায়, ‘‘বেডে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু কোনও রকম চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। মেয়েটা যন্ত্রণায় কেঁদেই চলেছে।’’ যদিও এ নিয়ে হাসপাতালের ওই কর্তা জানিয়েছেন, সেখানে শিশুটির চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

SSKM Corona Test Fire accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE