Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
কড়েয়া

পাওনা টাকার জন্যই খুন ব্যবসায়ী, সন্দেহ

পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের ঠানের বাসিন্দা শৈলেশ সম্পতরাও সিন্ধেকে। বুধবার স্থানীয় এক দুষ্কৃতীর কাছ থেকে সতেরো হাজার টাকা দিয়ে একটি আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছিল শৈলেশ খুনে ধৃত মহম্মদ শাহনওয়াজ। তা দিয়েই বৃহস্পতিবার ভোরে শৈলেশকে গুলি করে খুন করে সে। কড়েয়া-কাণ্ডে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন তথ্যই পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত খুনের অস্ত্রটি উদ্ধার হয়নি। এ দিন আদালতে ধৃতকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০০:২৬
Share: Save:

পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের ঠানের বাসিন্দা শৈলেশ সম্পতরাও সিন্ধেকে। বুধবার স্থানীয় এক দুষ্কৃতীর কাছ থেকে সতেরো হাজার টাকা দিয়ে একটি আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছিল শৈলেশ খুনে ধৃত মহম্মদ শাহনওয়াজ। তা দিয়েই বৃহস্পতিবার ভোরে শৈলেশকে গুলি করে খুন করে সে। কড়েয়া-কাণ্ডে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন তথ্যই পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত খুনের অস্ত্রটি উদ্ধার হয়নি। এ দিন আদালতে ধৃতকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক।

বৃহস্পতিবার ভোরে কড়েয়ার মিয়াজান ওস্তাগর রোডে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শৈলেশ সম্পতরাও সিন্ধেকে। ওই রাতেই শিয়ালদহ থেকে গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত শাহনওয়াজ।

পুলিশের দাবি, শৈলেশ ও শাহনওয়াজ পূর্ব পরিচিত। বছর দুই আগে একটি উড়ানে দু’জনের আলাপ হয়। ঠানেতে শৈলেশের পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবসায় শ্রমিক সরবরাহ করত শাহনওয়াজ। এ বাবদ শাহনওয়াজ কয়েক লক্ষ টাকা পেত শৈলেশের কাছে। তা ছাড়াও নগদ বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ হিসেবে শৈলেশকে সে দিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে শাহনওয়াজ। বেশ কিছু দিন ধরে সেই টাকা চেয়েও না পাওয়াতেই ওই খুন বলে গোয়েন্দাদের জেরার মুখে জানিয়েছে ধৃত।

পুলিশ জানান, মৃতের পকেট থেকে প্যান ও ভোটার কার্ডের সঙ্গে স্থানীয় একটি হোটেলের ভিজিটিং কার্ড মিলেছে। এর পরেই তাঁরা ওই হোটেলের কর্মীদের জেরা করেন। হোটেলের সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে শৈলেশ ও শাহনওয়াজকে শনাক্ত করেন কর্মীরা। পুলিশ জানিয়েছে, হোটেলের কর্মীরা জানান, শাহনওয়াজ মঙ্গলবার দুপুরে শৈলেশকে সঙ্গে নিয়ে ওই হোটেলে আসে। সে নিজেকে শৈলেশের বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেয়। পরে বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ শাহনওয়াজের সঙ্গেই হোটেল থেকে বেরিয়ে যায় শৈলেশ। তার পরে আর হোটেলে ফেরেনি সে।

লালবাজার সূত্রের খবর, শাহনওয়াজ জানিয়েছে, মঙ্গলবার শহরে আসার পরেই সে শৈলেশের কাছে বকেয়া টাকা চায়। কিন্তু শৈলেশ তার কথা উড়িয়ে দেন। এর আগেও বকেয়া টাকা চাইলে একই কথা বলেছিলেন শৈলেশ। এতে শাহনওয়াজ বুঝে যায়, ওই টাকা শৈলেশ তাকে দেবেন না। তখনই শৈলেশকে খুনের পরিকল্পনা করে সে।

পুলিশের দাবি, ধৃত জেরায় জানিয়েছে, বুধবার রাতে হোটেল থেকে বেরিয়ে দু’জনে প্রথমে যায় ধর্মতলা এলাকার এক পানশালায়। সেখান মদ্যপানের পরে যায় উত্তর কলকাতার একটি যৌনপল্লিতে।

পুলিশ জেনেছে, রাত একটার পরে সেখান থেকে বেরিয়ে শাহনওয়াজের সঙ্গে শৈলেশ ট্যাক্সি করে পার্ক সার্কাসের বীরেশ গুহ স্ট্রিটে পৌঁছন। এর পরে ট্যাক্সির বিল মিটিয়ে দু’জনে হাঁটতে হাঁটতে মিয়াজান ওস্তাগর রোডে পৌঁছলে শানওয়াজের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে বিবাদ বাধে শৈলেশের। দু’জনেই তখন মত্ত অবস্থায়। এর পরে শাহনওয়াজ শৈলেশকে হোটেলে ফিরে যেতে বলে তাকে তিনটি গুলি করে।

পুলিশ সূত্রের খবর, খুন করার পরে প্রথমে এলাকাতেই ছিল শাহনওয়াজ। তবে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকা ছাড়ে সে। দক্ষিণেশ্বর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘোরঘুরির পরে শিয়ালদহে পৌঁছলে গোয়েন্দারা তাকে গ্রেফতার করে। শাহনওয়াজের বিরুদ্ধে আগে থেকেই একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

তবে এখনও খোঁজ মেলেনি বুধবার ওই হোটেলে শৈলেশের সঙ্গে দেখা করতে আসা দুই ব্যক্তির। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে দু’জন শৈলেশের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাঁদের মধ্যে এক জন নিজেকে শৈলেশের দাদা বলে পরিচয় দেন। তাঁরা দু’জনেই শৈলেশের ঘরে যান। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ শৈলেশের পরিচিত ওই দু’জন কয়েক বার বাইরে যান। কিছুক্ষণ পরে ফিরেও আসেন। রাত আড়াইটে নাগাদ তাঁরা শেষ বারের মতো ফেরেন। কিন্তু তারও কিছু পরে কাউকে না জানিয়ে চলে যান। ওই দু’জনের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

businessman murder korea police court hotel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE