ফাইল চিত্র।
নোয়াপাড়া–দক্ষিণেশ্বর মেট্রোপথের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। শহরের মেট্রো প্রকল্পগুলি নিয়ে গত কয়েক মাসে সরকারি স্তরেও তৎপরতা বেড়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় বাজেটে এ রাজ্যের মেট্রো প্রকল্প নিয়ে নতুন কথা শোনার অপেক্ষায় ছিলেন অনেকেই। কিন্তু এ বারের বাজেটে তামিলনাডু, কেরল এবং কর্নাটকের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়লেও নামই শোনা গেল না পশ্চিমবঙ্গের। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট দেখতে বসা রাজ্যবাসীকে যা এ দিন কিছুটা হলেও হতাশ করেছে।
যদিও রেল কর্তাদের দাবি, রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দের খতিয়ান সমন্বিত ‘পিঙ্ক বুক’ প্রকাশিত হলে তবেই এ রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ স্পষ্ট হবে। তার আগে চটজলদি সিদ্ধান্তে আসা ঠিক নয়। চলতি বছরে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাডু, অসম এবং পুদুচেরিতে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে কেন্দ্রীয় বাজেটে দেশের মেট্রো প্রকল্পগুলির মধ্যে চেন্নাই মেট্রোর দ্বিতীয় পর্বের সম্প্রসারণ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ওই মেট্রোর ১১৮.৯ কিলোমিটার পথ নির্মাণের জন্য কেন্দ্র বরাদ্দ করেছে ৬৩ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা।
কেরলের কোচি মেট্রোর দ্বিতীয় পর্বে ১১.৬ কিলোমিটার মেট্রো পথের জন্য ১ হাজার ৯৫৭ কোটি ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দের কথা শুনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থ বরাদ্দ হয়েছে বেঙ্গালুরুর মেট্রোর জন্যেও। মহারাষ্ট্রের নাগপুর এবং নাসিকে মেট্রোর জন্য বরাদ্দ হয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা এবং ২ হাজার ৯২ কোটি টাকা।
এ দিন বাজেট বক্তৃতায় দেশে মেট্রো প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে নির্মলা জানিয়েছেন, দেশে ৭০২ কিলোমিটার পথে মেট্রো চলাচল করে। আরও ১০১৬ কিলোমিটার মেট্রো পথ তৈরির কাজ সরকার হাতে নিয়েছে। বিভিন্ন শহর এবং শহরতলির মধ্যে যোগাযোগ দ্রুত করতে ‘মেট্রো লাইট’ এবং ‘মেট্রো নিয়ো’ প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেছেন নির্মলা। দেশের ২৭টি টিয়ার–টু শহরকে ওই প্রকল্পের আওতায় আনার কথাও বলেন তিনি।
চিরাচরিত মেট্রো প্রকল্পের বদলে বিভিন্ন ছোট শহরে ‘মেট্রো লাইট’ প্রকল্পকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ট্রামের মতো রাস্তার এক পাশে নির্দিষ্ট পথ ধরে ছোটে ওই মেট্রো। পাশাপাশি, ‘মেট্রো নিয়ো’ প্রকল্পে বিদ্যুৎ বা ব্যাটারিচালিত একাধিক হালকা ওজনের কামরা একসঙ্গে জুড়ে চালানো হয়। ট্রলি বাসের মতো ওই মেট্রো রেললাইন ছাড়াই টায়ার ব্যবহার করে ছুটতে পারে।
তবে এ দিনের বাজেট বক্তৃতায় দেশের বিভিন্ন মেট্রো প্রকল্পে বরাদ্দের কথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর মুখে শোনা গেলেও এ রাজ্যের নাম শুনতে না পেয়ে রেলপ্রেমীদের অনেকেই বিমর্ষ। একটি রেলপ্রেমী সংগঠনের সদস্য অর্কপল সরকার বলেন, ‘‘নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পে হয়তো টাকা বরাদ্দ করা হবে। কিন্তু যে ভাবে দেশের অন্যান্য শহরে নতুন প্রকল্পের কথা শোনা গেল, তার কিছুই এখানে শুনলাম না। নতুন চিন্তাভাবনার কথা শুনব ভেবেছিলাম।’’
রেলপ্রেমী সংগঠনের আর এক সদস্য রুদ্রনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘সদ্য শুরু হওয়া প্রকল্পগুলি নিয়েও কোনও কথা শুনলাম না। অথচ ওই সব প্রকল্প নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা অনেক।’’ আর এক সদস্য কৌস্তুভ চৌধুরীর কথায়, ‘‘নতুন কোনও প্রকল্পের সমীক্ষার কথাও শুনলাম না। আপাতত পিঙ্ক বুক দেখার অপেক্ষায় আছি।’’
মেট্রো কর্তারা অবশ্য বাজেট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পিঙ্ক বুক দেখার পরেই এ নিয়ে কথা বলবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বিগত বছরেও বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। সে সময়ে রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পে মোট ১ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে শুধু ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্যেই ধার্য হয়েছিল ৯০৫ কোটি টাকা। জোকা-বি বা দী বাগ প্রকল্পে ৯৯ কোটি, নিউ গড়িয়া–বিমানবন্দর প্রকল্পে ৩৩৮ কোটি এবং নোয়াপাড়া-বারাসত প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy