শ্যামবাজারে পরিষ্কার করা হচ্ছে দুর্ঘটনাস্থল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
বাস যাতে না দাঁড়ায়, তার জন্য লাগানো রয়েছে সেই নির্দেশ লেখা বোর্ড। কিন্তু তা মেনে চলেন ক’জন বাসচালক?
বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্যামবাজারের ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ে মেট্রো স্টেশনের কাছে দুই মিনিবাসের রেষারেষিতে এক যুবকের গুরুতর জখম হওয়ার ঘটনায় ফের উঠেছে সেই প্রশ্ন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই যাত্রী তোলার জন্য ওই জায়গায় রাস্তার উপরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তিনটি রুটের মিনিবাস। নিজেদের মর্জিমতো যত ক্ষণ খুশি দাঁড়িয়ে থেকে এগোনোর সময়ে কে কার আগে যাবে, তা নিয়ে শুরু হয় লড়াই। যার জেরে এর আগেও বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই মেট্রো স্টেশন থেকে কয়েকশো মিটার দূরে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে ট্র্যাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকলেও এ ব্যাপারে তাঁরা উদাসীন বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই রাস্তা দিয়ে শ্যামবাজার থেকে হাওড়া, আমতলা ওপি এবং বি বা দী বাগ— এই তিনটি রুটের মিনিবাস চলে। অভিযোগ, প্রতিটি বাসই দেশবন্ধু পার্কের সামনে থেকে ছেড়ে পাঁচ মাথার মোড় পার করেই মেট্রো স্টেশনের সামনের রাস্তায় দাঁড়াতে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ধরা যাক, সকাল ৮টা নাগাদ কয়েকটি মিনিবাস দেশবন্ধু পার্ক থেকে ছেড়ে এসে ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ে মেট্রো স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল। এ বার যত ক্ষণ না পরের ট্রিপের বাস সেখানে আসছে, তত ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে আগের বাস।’’ পরের বাস আসার পরেই শুরু হয় যাত্রী তোলা এবং কোন রুটের বাস আগে যাবে, তা নিয়ে লড়াই। কারণ, তিনটি মিনিবাসই এক রুট ধরে হাওড়ার দিকে যায়।
কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমরা আবারও পুলিশকে চিঠি দেব। তাতেও যদি সুরাহা না হয়, তখন নিজেরাই বাস সরাতে রাস্তায় নামব।’’ বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, অনেক সময়ে বাসগুলি সামনে এগিয়ে গিয়েও ফের যাত্রী তোলার জন্য পিছনের দিকে আসতে শুরু করে। আর তাতে মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। এ দিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা দেবাশিস দাস নামের ওই যুবক একটি মিনিবাসে উঠতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে ওই একই রুটের আর একটি মিনিবাস সামনের বাসটিকে ওভারটেক করে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাতেই দু’টি বাসের মাঝে পড়ে জখম হন ওই যুবক। ঘটনার পরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাঁদের প্রশ্ন, কয়েকশো মিটার দূরে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও চালকদের এত সাহস হয় কী ভাবে?
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আরও অভিযোগ, পাঁচ মাথার মোড়ে কলকাতা পুলিশের সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। তাতে সব সময়েই দেখা যাচ্ছে, কী ভাবে নিয়ম ভেঙে মেট্রো স্টেশনের সামনে বাসগুলি দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বাসগুলি ওখানেই দাঁড়ায়। তাই যাত্রীরাও ওখানেই ওঠানামা করেন। এক-এক সময়ে রাস্তায় পাশাপাশি তিনটি বাস
দাঁড়িয়ে পড়ে।’’
কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় না কেন? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে এ দিন কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পান্ডেকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy