অভিজিৎ শর্মা রায়
বাড়ি থেকে হাঁটতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এক অধ্যাপকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করল রেল পুলিশ। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অভিজিৎ শর্মা রায় (৫১)। সোমবার রাতে বিধাননগর রোড রেল স্টেশনের কাছে এক নম্বর আপ লাইনে তাঁর দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। অভিজিৎবাবু থাকতেন দমদম ক্যান্টনমেন্টের এন সি মিত্র লেনে একটি বহুতল আবাসনে। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর স্ত্রী দেহটি শনাক্ত করেন। তবে রাত পর্যন্ত পরিবারের তরফে লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। রেল পুলিশ অবশ্য একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ওই অধ্যাপক দমদম ক্যান্টনমেন্ট থেকে কী ভাবে বিধাননগর স্টেশনের কাছে পৌঁছলেন, তা-ও খতিয়ে দেখছে রেল পুলিশ।
মৃতের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে রেল পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিজিৎবাবু কোনও কারণে অবসাদে ভুগছিলেন। সেই কারণে গত কয়েক বছর ধরে ওষুধও খাচ্ছিলেন তিনি।
অভিজিৎবাবু মৌলানা আজ়াদ কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রধান ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর এক আত্মীয় তীর্থঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁর স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছেন। ছেলে দিল্লিতে স্নাতক স্তরের পড়ুয়া। তীর্থঙ্করবাবু জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবারও সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বাড়ি থেকে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন অভিজিৎবাবু। সাধারণ ভাবে আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা হাঁটার পরে তিনি বাড়ি ফিরে আসতেন। কিন্তু সোমবার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি না ফেরায় প্রথমে আশপাশের এলাকা এবং আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। কিন্তু অভিজিৎবাবুকে না পেয়ে দমদম থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করা হয় পরিবারের তরফে।
মৃতের ওই আত্মীয় জানান, মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত কোনও জায়গা থেকে দুর্ঘটনার খবর না পাওয়ায় তাঁরা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, অভিজিৎবাবু হয়তো অন্য কোথাও গিয়েছেন। তীর্থঙ্করবাবু বলেন, “কিন্তু বেলা ১১টা নাগাদ রেল পুলিশ ফোন করে জানায়, বিধাননগর রোড স্টেশনের কাছে একটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গে দেহের ছবিও পাঠায় তারা। বিকেলে ওঁর স্ত্রী গিয়ে দেহটি শনাক্ত করেন।”
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত ৯টা ৪০ নাগাদ খবর আসে, বিধাননগর রেল পুলিশ এলাকার এক নম্বর লাইনে স্টেশনের কাছে এক ব্যক্তির দেহ পড়ে রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে, তিনি ট্রেনে কাটা পড়েছেন। রেল পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। তার প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জেনেছে, ট্রেনে কাটা পড়েই ওই অধ্যাপকের মৃত্যু হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, দ্রুত গতির কোনও ট্রেনের নীচেই অভিজিৎবাবুর মৃত্যু হয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত রেলের তরফে কোনও ‘নকডাউন’ মেসেজ পাঠানো হয়নি পুলিশকে। রেল পুলিশের এক কর্মী জানান, ওই সময়ে ওই লাইন দিয়ে কোন কোন ট্রেন গিয়েছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে রেলের কাছে। কারণ, সাধারণত ট্রেনের সঙ্গে কারও ধাক্কা লাগলে ট্রেনচালক বা গার্ড সেই সংক্রান্ত একটি ‘মেমো’ পাঠান। এ ক্ষেত্রে ট্রেনের চালককে চিহ্নিত করা গেলে তাঁর কাছ থেকে জানা যেতে পারে, সে দিন ঠিক কী ঘটেছিল। রেল পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকার আশপাশের বাসিন্দাদের কাছেও জানতে চাওয়া হবে, সেই রাতে তাঁরা কেউ কিছু দেখেছেন কি না। পরিবার সূত্রের খবর, অধ্যাপকের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর স্ত্রী কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy