বেইলি ব্রিজ মাঝেরহাটে।
মাঝেরহাটে বিকল্প রাস্তা আগামী শুক্রবারের আগেই খুলে দিতে চায় রাজ্য সরকার।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে কার্যত দিন-রাত এক করে কাজ করছেন রেল এবং পূর্ত দফতরের শ’তিনেক কর্মী।
বৃহস্পতিবার থেকে বেইলি ব্রিজের বিভিন্ন অংশ জুড়ে ফেলার কাজ শুরু করেছেন ‘গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’-এর কর্মীরা। একটি সেতু তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। অন্যটি তৈরির কাজও শুরু হবে আজ-কালের মধ্যেই।
রেলের অংশে গত রবিবারই ক্রসিং পয়েন্ট এবং ওভারহেড তারের খুঁটি সরানোর কাজ শেষ করা হয়েছিল। লেভেল ক্রসিংয়ের জন্য কেবিন তৈরির কাজও প্রায় শেষের পথে। লেভেল ক্রসিংয়ের রাস্তা তৈরির কাজে সবে হাত দেওয়া হয়েছে। রেলকর্তাদের দাবি, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই লাইনের উপর দিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করা হবে। বসানো হবে লেভেল ক্রসিংয়ের বুম-বারও। তবে তার জন্য শিয়ালদহ-বজবজ শাখায় যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল খুব একটা ব্যাহত হবে না বলেই দাবি রেলকর্তাদের।
প্রায় ২৫ মিটার লম্বা এবং পাঁচ মিটার চওড়া এক-একটি বেইলি ব্রিজের ওজন ৬২.৫ টন। এক-একটি ব্রিজের ভিতরের রাস্তার পরিসর ৪.২ মিটার। পাশাপাশি থাকা দু’টি সেতুর মাঝের ব্যবধান ৭৫ সেন্টিমিটার।
‘গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ সূত্রের খবর, সেতুগুলি তৈরি করে তার নীচে বিশেষ রোলার ব্যবহার করে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হবে। নিউ আলিপুর অ্যাভিনিউয়ের দিকে সেতুর স্তম্ভ নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। হুমায়ুন
কবীর সরণির দিকে রেললাইনের পাশে বেইলি ব্রিজের স্তম্ভের পাইলিংয়ের কাজও শেষ। আজ, শনিবার সকালের মধ্যেই হুমায়ুন কবীর সরণির দিকে সেতুর স্তম্ভ নির্মাণের বাকি কাজ শেষ করা হবে।
স্তম্ভ নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করতে বিশেষ উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কংক্রিট ব্যবহার করা হচ্ছে বলে পূর্ত দফতর সূত্রের খবর। আলিপুর অ্যাভিনিউয়ের দিকেই সেতুর মূল অংশ থাকবে। ওই প্রান্ত থেকেই সেতুটি শুরু হয়ে হুমায়ুন কবীর সরণির দিকের স্তম্ভে শেষ হবে।
ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতরের তরফে হুমায়ুন কবীর সরণির দিকে লেভেল ক্রসিং পৌঁছনোর জন্য প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। প্রায় দেড় ফুট উঁচু করে ওই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ১৯টি ম্যানহোলকে নতুন ভাবে ভারী যান চলাচলের উপযোগী করতে ভেঙে নতুন করে গড়া হয়েছে। যান নিয়ন্ত্রণের কাজে সুবিধার জন্য হুমায়ুন কবীর সরণির সামনে নতুন একটি পুলিশ কিয়স্কও বসানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, নিউ আলিপুরের দিকে প্রায় ৪০০ মিটার রাস্তাও নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। ওই অংশে রাস্তা কিছুটা চওড়া করার পাশাপাশি কমবেশি ৪০টি ম্যানহোল নতুন করে তৈরি করা হয়েছে।
রেল এবং পূর্ত দফতরের শ’তিনেক কর্মী ছাড়াও সেতু প্রস্তুতকারক সংস্থার ১৫০ জন কর্মী বেইলি ব্রিজের যন্ত্রাংশ জোড়ার কাজ করছেন। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ হচ্ছে। আগামী শুক্রবারের আগেই রাস্তা খুলে দেওয়ার সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।”
রেলের দাবি, তাদের অংশের কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তবে লেভেল ক্রসিং চালু হলে শিয়ালদহ-বজবজ শাখায় যাত্রিবাহী ট্রেনের সংখ্যা কিছুটা কমানো হতে পারে।
পুলিশ সূত্রের খবর, যানজটের আশঙ্কা থাকায় ডায়মন্ড হারবার রোডের দিক থেকে কলকাতার দিকে ছোট গাড়ি আসার জন্য বেইলি ব্রিজকে প্রাথমিক ভাবে ব্যবহার করা হতে পারে। তার পরে পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy