প্রতীকী ছবি।
বর্ষবরণের রাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের টিকিটে পুলিশের সিলমোহর ব্যবহার করতে হবে বিভিন্ন পানশালা ও রেস্তোরাঁগুলিকে। কোথায় কত লোকের জমায়েত হচ্ছে, তা যাতে নজরে থাকে প্রশাসনের। সল্টলেক, রাজারহাট-নিউ টাউন ও ভিআইপি রোডের ধারের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিকে এই নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
মঙ্গলবার কমিশনারেট এলাকার এমনই পনেরোটি বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনারেটের কর্তারা। সেখানে আয়োজনকারীদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পুলিশের অনুমোদনের বাইরে একটি টিকিটও বিক্রি করা যাবে না। বিধাননগরের ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ জানান, অনুষ্ঠানের টিকিটে পুলিশের সিলমোহর ও সই বাধ্যতামূলক। বিক্রির আগে পুলিশের কাছ থেকে টিকিটে ওই সিলমোহর লাগিয়ে আনতে হবে বলে অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ৩১ ডিসেম্বর রাতে নিক্কো পার্কে দর্শকেরা ভাঙচুর চালান। তাঁদের অভিযোগ ছিল, চড়া দামে টিকিট কেটেও অনেকেই মদ ও খাবার পাননি। পরিস্থিতি এমনই হয় যে পুলিশ বাধ্য হয়েছিল সেখানে ঢুকে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে।
বুধবার ডিসি (সদর) জানান, সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠানের আয়োজন করার আগে খাবার ও পানীয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে কি না, তা পুলিশকে জানাতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ধরনের অব্যবস্থার কারণে গোলমাল হলে শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, ভিআইপি রোডের ধারে পানশালাগুলিতে যাতে কোনও ভাবেই রাত ১২টার পরে মদ বিক্রি না হয়, আবগারি দফতরকে তা দেখতে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ আদালতের নির্দেশে এখন ওই এলাকার পানশালাগুলিতে পুলিশের প্রবেশাধিকার নেই। পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, পানশালার ভিতরের গোলমাল অনেক সময়ে রাস্তায় চলে আসে। তাই আবগারি দফতরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে মদ বিক্রির সময়সীমার দিকে নজর রাখতে।
বিধাননগর কমিশনারেটের অবশ্য দাবি, বর্ষবরণের রাতে সব ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্যই তারা তৈরি। পুলিশ কর্তারা জানান, নির্দিষ্ট সময় অন্তর পাঁচশো জন করে পুলিশকর্মীকে টহলদারির জন্য রাস্তায় নামানো হবে। এ জন্য বাইরে থেকে আলাদা বাহিনী আনানো হচ্ছে। এ দিকে, মত্ত অবস্থায় বাইক বা গাড়ি চালাতে দেখলে সেই সব চালকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তার বাইরে প্রতিবারের মতো কুইক রেসপন্স টিম, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, অ্যান্টি সাবোতাজ টিম যেমন থাকবে, তেমনই থাকবে সাদা পোশাকে পুলিশি নজরদারি। প্রস্তুত থাকবে বম্ব স্কোয়াডও।
কমিশনারেট এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিউ টাউনের ইকো পার্ক। বড়দিনের দিনই সেখানে দর্শক সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ ছুঁয়েছিল। হিডকো কর্তৃপক্ষের দাবি, ৩১ডিসেম্বর রাতে সেই সংখ্যা সওয়া ১ লক্ষ পার করে যাবে। ফলে সেখানেও প্রশাসনকে তৎপর থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। হিডকো কর্তৃপক্ষ জানান, ৬টি বুথ থাকবে সহযোগিতার জন্য। রাখা হবে পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম। ওয়াচটাওয়ার, ড্রোন-সহ সব ধরনের নজরদারি ব্যবস্থাও থাকবে বলে জানিয়েছে হিডকো। এ দিকে, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্যও রাস্তায় বাড়ানো হচ্ছে সিভিক পুলিশের সংখ্যা। সল্টলেক, নিউ টাউন-সহ কমিশনারেটের প্রতিটি থানা এলাকার প্রধান রাস্তাগুলিতে ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে নিউ টাউনের ট্রাফিক পুলিশকে হিডকো অনুরোধ করেছে যাতে রাস্তার ধারে দড়ির ব্যারিকেড করে লোকজনের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy