গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলে বৃহস্পতিবার অভিভাবকদের বিক্ষোভ। ছবি: সুমন বল্লভ
স্কুল থেকে ছড়াতে পারে ডেঙ্গি। তাই অবিলম্বে এক সপ্তাহ ক্লাস বন্ধ রেখে স্কুল চত্বর পরিষ্কার করাতে হবে। এই দাবিতেই বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের সামনে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকদের একাংশ। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, স্কুল চত্বর নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। তাই সেখানে ডেঙ্গির মশা জন্মানোর কথা নয়। অভিভাবকদের দাবিমতো সাত দিন ছুটি না দিলেও তাঁরা জানিয়েছেন, শুক্রবার স্কুল ছুটি দিয়ে সাফাইয়ের কাজ করা হবে।এ দিনের বিক্ষোভের পরে প্রশ্ন উঠেছে, ডেঙ্গির মরসুমে কতটা সতর্ক শহরের অন্য স্কুলগুলি?
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ভাইস প্রেসিডেন্ট কৃষ্ণ দামানি বললেন, ‘‘আমাদের স্কুলে সারা বছর কীটনাশক স্প্রে ছড়ানো হয়। এখন আরও সতর্ক হয়েছি। পড়ুয়াদেরও সচেতন করা হচ্ছে।’’ লা মার্টিনিয়ারের সচিব সুপ্রিয় ধরেরও একই বক্তব্য। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুল চত্বরে সারা বছরই আমরা কীটনাশক ছড়াই। ডেঙ্গি প্রতিরোধেও সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ বেথুন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা নিজেরা তো স্কুল পরিষ্কার রাখিই, সেই সঙ্গে পূর্ত দফতরও আমাদের স্কুল দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে। স্কুলে অনেক গাছ আছে। সেই গাছের পাতা পড়ে যাতে জমে না থাকে এবং গাছের কোটরে যাতে জল না জমে, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।’’ মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (মেন)-এর শিক্ষক প্রণব বড়ুয়া বলেন, ‘‘স্কুলে যাতে কোথাও জল জমে না থাকে, সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছি।’’
গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের কয়েক জন পড়ুয়া ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার বাসিন্দা, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অক্ষিতি দাস (১০) সম্প্রতি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। সে-ও গোখেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। অভিভাবকদের দাবি, এ দিন দুই ছাত্রী স্কুলে আসার পরেই জ্বরে আক্রান্ত হয়। তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যায় তারা। তার পরেই অভিভাবকদের একাংশের ধারণা হয়, স্কুল থেকেই ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে। তাঁরা জানান, স্কুলের বেশ কয়েক জন ছাত্রী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এক জন মারাও গিয়েছে। ফলে অনেকেরই প্রশ্ন, ডেঙ্গির মশা স্কুলেই কামড়াচ্ছে না তো? প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, ‘‘স্কুলের মশার কামড়েই ডেঙ্গি হচ্ছে, এমনটা আমরা বলছি না। আমাদের দাবি, স্কুল চত্বর পরিষ্কার রাখতে হবে। স্কুলে জমা জল রাখা চলবে না। ঠিক মতো ব্লিচিং ও কীটনাশক ছড়াতে হবে।’’
একাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়ার অভিভাবক বলেন, ‘‘স্কুলের শৌচাগার যে পরিষ্কার নয়, এটা আমরা আমাদের মেয়েদের কাছ থেকে অনেক বার শুনেছি। ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’ বাবদ স্কুল যে টাকা নেয়, সেই টাকাতেই স্কুল চত্বর পরিষ্কার করা হোক।’’ স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল বৈশাখী ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, ‘‘আমাদের স্কুলের এত জন পড়ুয়ার মধ্যে হাতে গোনা কয়েক জনেরই ডেঙ্গি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ডেঙ্গির মশা তো ওদের বাড়ি বা বাড়ির আশপাশের এলাকাতেও কামড়ে থাকতে পারে। আমাদের স্কুলে নিয়মিত সাফাইকাজ চলে। জল জমতে দেওয়া হয় না। এখান থেকে ডেঙ্গি ছড়ানোর আশঙ্কা নেই।’’
বৈশাখীদেবী জানান, স্কুল ছুটি দিয়ে সাফাইয়ের জন্য কয়েক জন অভিভাবক বারবার দাবি করতে থাকেন। শুক্রবার ক্লাসের পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষা স্থগিত রেখে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘এলাকার কাউন্সিলরও এসেছিলেন। স্কুলের পরিচ্ছন্নতা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। পুরসভার তরফে স্প্রে ছড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy