—প্রতীকী চিত্র।
নিউ টাউনের ফাঁকা রাস্তায় পথ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে আদৌ কি ফাঁদ পাতা হয়েছে?
এমন প্রশ্ন ওঠার কারণ, প্রশাসনের দুই তরফের ভিন্ন মত। পুলিশ জানিয়েছে, অনলাইনে জরিমানার জন্য ক্যামেরা চালু করা হবে। তারই প্রস্তুতি চলছে। হিডকোর সঙ্গে আলোচনাও চলছে। অথচ, হিডকো জানাচ্ছে, এমন কোনও পরিকল্পনাই তাদের নেই। বিধি ভাঙা গাড়ির ছবি তুলে তা পুলিশ কন্ট্রোলে পাঠানো হয়। পুলিশ তা দেখে সেই মতো গাড়ির মালিককে জরিমানা করে। ফলে এই দ্বন্দ্বের মাঝেই নিউ টাউনের রাস্তায় ঘটে চলেছে একের পর এক দুর্ঘটনা। যা নিয়ে অস্বস্তিতে নিউ টাউনের ট্র্যাফিক পুলিশ।
এক পদস্থ আধিকারিক জানাচ্ছেন, গত মাসে এই বাবদ ১৬ লক্ষ টাকারও বেশি জরিমানা আদায় করা হয়েছে। জরিমানার সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের বেশি। প্রতি রাতে বিভিন্ন জায়গায় নাকা-তল্লাশি চলছে। তা সত্ত্বেও বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
চিনার পার্ক মোড় থেকে আকাঙ্ক্ষা মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে বুধবারই শ্মশানযাত্রী বোঝাই ছোট লরি একটি বাসকে বেপরোয়া ভাবে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। রাস্তায় ছিটকে পড়ে জখম হন ছোট লরির যাত্রীরা। ওই ঘটনাটি দুপুরের, যখন রাস্তায় পুলিশ থাকে।
গত মাসের শেষের এক রাতে বিশ্ব বাংলা সরণিতে বেপরোয়া একটি গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল। সে বার এক বেপরোয়া চালক গাড়ি নিয়ে অন্য একটি গাড়িকে ধাক্কা মারেন। তার জেরে মৃত্যু হয় গৌরাঙ্গনগর এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা সাইকেল আরোহীর।
চলতি বছরের শুরুতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কাছে এক ছাত্র গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারানোয় তোলপাড় হয়েছিল ওই এলাকায়। তার পরেও একাধিক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা সরণি-সহ একাধিক রাস্তায় ঘটে চলেছে। কিন্তু বেপরোয়া চালকদের কোনও ভাবেই ঠেকানো যায়নি।
বিধাননগর পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েক বছর ধরেই পরিকল্পনা চলেছে, দুর্ঘটনা এড়াতে ওই বিশেষ ক্যামেরা রাস্তায় বসানোর বিষয়ে। কোনও গাড়ি পুলিশের নির্ধারিত গতি উপেক্ষা করলেই ওই ক্যামেরায় তা ধরা পড়বে। দ্রুত সেই গাড়ির ছবি উঠে যাবে। তার খানিক ক্ষণের মধ্যেই অতিরিক্ত গতি কিংবা ট্র্যাফিক আইন ভাঙায় জরিমানার তথ্য চালক কিংবা গাড়ির মালিকের মোবাইলে চলে যাবে। কলকাতায় তেমন ব্যবস্থাই রয়েছে। যে কারণে মা
উড়ালপুল কিংবা ইস্টার্ন বাইপাসে গাড়ি চালানোর সময়ে চালকেরা সর্বদা সতর্ক থাকেন।
নিউ টাউনের ট্র্যাফিক পুলিশ জানাচ্ছে, ওই ধরনের ৩০টি ক্যামেরা বসানো থাকলেও তা চালু করা যায়নি। তবে দ্রুত চালু করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এ দিন হিডকোর এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই ধরনের কোনও ক্যামেরার প্রকল্পই হিডকোর নেই। যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে, তাতে ক্যামেরায় বিধি ভাঙা গাড়ির ছবি দেখে পুলিশ নিজেই ব্যবস্থা নেবে।’’
এমন বিভ্রান্তির জেরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, পরিকল্পিত শহর নিউ টাউনের রাস্তায় পথ নিরাপত্তার কথা ভেবে বেপরোয়া চালকদের সতর্ক করতে প্রশাসন কি আদৌ কিছু ভেবেছে? স্থানীয় মানুষের দাবি, জরিমানার ভয় না থাকলে বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণ করা এক প্রকার অসম্ভব।
বিধাননগর কমিশনারেটের কর্তারা জানান, যে হেতু বিশ্ব বাংলা সরণিতে স্পিড ব্রেকার বসানো যাবে না, ফলে সেখানে গার্ডরেল ফেলে গাড়ির গতি রাতে কমানো হয়। একই সঙ্গে শুক্র ও শনিবার রাতে পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা রাস্তায় নেমে নাকা-তল্লাশি করেন। তা সত্ত্বেও বেপরোয়া চালকদের যে আটকানো যাচ্ছে না, তা স্বীকার করছে সেখানকার পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy