Advertisement
E-Paper

গরমে মিড-ডে মিলে স্কুলের গাছের আম, উচ্ছে

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানাচ্ছেন, এই তীব্র দাবদাহে মিড-ডে মিলে যতটা সম্ভব সহজপাচ্য খাবার দেওয়ার কথাই ভেবেছেন তাঁরা।

গরমে বাঙুরের একটি স্কুলে মিড-ডে মিলে দেওয়া হচ্ছে স্কুলের গাছ থেকে পাড়া আম দিয়ে ডাল, আলু সেদ্ধ ও ডিম সেদ্ধ।

গরমে বাঙুরের একটি স্কুলে মিড-ডে মিলে দেওয়া হচ্ছে স্কুলের গাছ থেকে পাড়া আম দিয়ে ডাল, আলু সেদ্ধ ও ডিম সেদ্ধ। —নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩২
Share
Save

স্কুলের গাছের কাঁচা আম যে এই তীব্র গরমে এত কাজে লেগে যাবে, তা আগে বোঝেননি নারায়ণদাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুল কর্তৃপক্ষ। মিড-ডে মিলে প্রায় রোজই ডাল রান্না হয়। সেই ডালেই এ বার স্কুলের গাছের কাঁচা আম মিশিয়ে দিচ্ছেন মিড-ডে মিলের রাঁধুনিরা। মিড-ডে মিলে সেই কাঁচা আম দেওয়া টকডাল, সঙ্গে আলু ও ডিম সেদ্ধ দিয়ে ভাত একটু বেশিই খেয়ে ফেলছে পড়ুয়ারা।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানাচ্ছেন, এই তীব্র দাবদাহে মিড-ডে মিলে যতটা সম্ভব সহজপাচ্য খাবার দেওয়ার কথাই ভেবেছেন তাঁরা। সঞ্জয় বলেন, ‘‘হাঁসফাঁস করা গরমে অনেক পড়ুয়াই খেতে চাইছে না। এ বার স্কুলের আম গাছে প্রচুর আম হয়েছে। তাই পড়ুয়াদের জন্য সেই আম দিয়েই আমডাল করা হয়েছে।’’ ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া দীপ্তিনীল রায়, চতুর্থ শ্রেণির শেখ আতিফ আলিরা জানাচ্ছে, অন্য ডালের থেকে আমডাল খেতে বেশি ভাল লাগে। তাই স্কুলের মিড-ডে মিলে এখন যে খাবার পাচ্ছে, তা বেজায় পছন্দ হচ্ছে তাদের।

সন্তোষপুর ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী সেন জানাচ্ছেন, মিড-ডে মিলে স্কুলের বাগানের ফলনও বেশ কাজে আসছে। স্কুলের গাছের পাতিলেবু থেকে উচ্ছে, বেদানা— সবই পাতে পড়ছে পড়ুয়াদের। সর্বাণী বলেন, ‘‘ডালে পাতিলেবু দিয়ে খেলে গরমে ভাল লাগে। আমাদের স্কুলে বেদানা গাছেও ভাল ফলন হয়েছে এ বার। তাই মিড-ডে মিলে বেদানার চাটনি করার পরিকল্পনা আছে। বাগানের উচ্ছে দিয়ে করা হবে তেতোর ডাল।’’ তিনি আরও জানাচ্ছেন, শিক্ষা দফতর থেকে সাপ্তাহিক মিড-ডে মিলের মেনু ঠিক করা থাকে। তবে প্রবল গরমে যতটা সম্ভব হালকা খাবার দেওয়ার চেষ্টাই করা হচ্ছে পড়ুয়াদের জন্য।

শহরের অনেক স্কুলেই নিজস্ব রান্নাঘর নেই। সে সব ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গোষ্ঠী শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মতো মিড-ডে মিলের খাবার তৈরি করে। সেই খাবার এক সঙ্গে একাধিক স্কুলে পাঠানো হয়। এ রকম ভাবেই মিড-ডে মিলের খাবার সরবরাহ করা হয় মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখা, যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলে। সেখানকার প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা ওই গোষ্ঠীর কর্মীদের বলছেন, যতটা সম্ভব কম তেল-মশলা দিয়ে রান্না করতে। আম বা উচ্ছে দিয়ে ডালের মতো পদ করতে। সাধারণত প্রতি শনিবার মিড-ডি মিলে খিচুড়ি দেওয়া হয়। তবে এই গরমে খিচুড়ির বদলে অন্য কোনও সহজপাচ্য পদ রান্নার কথাও বলবেন তাঁরা।

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই অবশ্য বলছেন, ‘‘আমডাল সহজপাচ্য খাবার হলেও কাঁচা আম ডালে দিয়ে রান্না করলে আমের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি-র গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। বরং তা কাঁচা খাওয়া অথবা ভাত-ডালের মধ্যে লেবুর রস দিয়ে খেলে তাতে ভিটামিন সি-র গুণাগুণ বজায় থাকে। তবে এই গরমে দেখতে হবে যেন রান্না নষ্ট না হয়ে যায়। মিড-ডে মিল রান্না করে তা যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
খাবার হতে হবে সহজপাচ্য। খিচুড়ি খেলেও তাতে বেশি মশলা দিলে চলবে না। কম তেল-মশলার খিচুড়ি চলতে পারে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mid Day Meal Summer

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}