Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Cyber Crime

Cyber Crime: হ্যাকারের ‘খপ্পরে পড়ে’ বদলাতে হল ছেলের স্কুলও

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০৬
Share: Save:

অনলাইন ক্লাস চলছে ছাত্রটির। আচমকাই সে খেয়াল করে, ল্যাপটপের স্ক্রিনের উপরে বোঁ বোঁ করে ঘুরছে কারসর। মাউস দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ছাত্রটি বুঝতে পারে, অনলাইন ক্লাসে লগ-ইন করা সত্ত্বেও শিক্ষক তাকে দেখতে পাচ্ছেন না। অথচ, বন্ধুদের কাছ থেকে সে জানতে পারে, তার নামে অন্য কেউ অনলাইন ক্লাসে ঢুকে পড়েছে।

তিনি সাইবার জালিয়াতের খপ্পরে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সল্টলেকের বাসিন্দা, শিল্প দফতরের এক সরকারি আধিকারিক। গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে এমনই নানা সমস্যার শিকার হয়েছেন সল্টলেকের এফডি ব্লকের বাসিন্দা, প্রেমজিৎ মিত্র নামে ওই ব্যক্তি। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে ওঠে যে, ছেলের স্কুল অবধি বদল করতে বাধ্য হন তিনি। সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধাননগর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রেমজিৎ। কিন্তু ওই হ্যাকারের টিকিও ছুঁতে পারেনি পুলিশ। প্রেমজিৎ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ প্রকল্পের নোডাল অফিসারও।

কী কী ধরনের সমস্যা হচ্ছিল?

প্রেমজিৎ জানাচ্ছেন, নানা ধরনের সমস্যা। কখনও তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে সরকারি আধিকারিকের পরিচয় বদলে লিখে দেওয়া হচ্ছে কুকুরের প্রশিক্ষক। কখনও আবার ছেলের অনলাইন ক্লাসের চ্যাটবক্সে চলে আসছিল অশ্রাব্য গালিগালাজ। পরিস্থিতি এমনই হয়ে ওঠে যে, এক সময়ে স্কুলের তরফে তাঁকে ডেকে তিরস্কার করা হয়।

ওই সরকারি আধিকারিকের কথায়, ‘‘যেন ভৌতিক কাণ্ড! মোবাইল চালু রেখে বাড়িতে কোনও কথা বলা যেত না। সেই কথার প্রসঙ্গ টেনে মোবাইলে কেউ জবাব দিতে শুরু করে দিত। স্কুল তো বটেই, এক সময়ে পুলিশও সব কিছুর জন্য আমার ছেলেকে দায়ী করতে শুরু করল।’’

প্রেমজিৎ জানান, তাঁদের আত্মীয়দের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। সেই গ্রুপে তাঁর শ্বশুরও ছিলেন। প্রেমজিতের কথায়, ‘‘শ্বশুরমশাইয়ের মৃত্যুর পরে ওই ফোনটা কেউ ব্যবহার করতেন না। এক দিন ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেখা গেল, লেখা রয়েছে, শ্বশুরমশাইয়ের নম্বরের ব্যবহারকারী গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন।’’

অভিযোগ, এমনও হয়েছে, প্রেমজিতের ছেলের কাছে মেসেজ এসেছে, তার বাবা আর বাড়ি ফিরবেন না। কোনও দিন আবার প্রেমজিতের বন্ধুদের কাছে তাঁরই নম্বর থেকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ পাঠানো হয়েছে। প্রেমজিৎ বলেন, ‘‘বন্ধুদের বললাম আমাকে ব্ল্যাকলিস্ট করতে। আর ছেলের স্কুল বদল করলাম। ওর অনলাইন ক্লাসে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ছেলে ভয় পেয়ে যাচ্ছিল খুব।’’

এর পরে গত সেপ্টেম্বর মাসে ওই আধিকারিক বিধাননগর সাইবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রেমজিৎ বলেন, ‘‘সাইবার থানার পুলিশ আমার ফোনে কিছু একটা ব্যবস্থা করে দেয়। তার পরেই ওই সমস্ত উপদ্রব থেমে যায়। কিন্তু কে বা কারা এর পিছনে ছিল কিংবা রয়েছে, সেটা জানতে পারছি না। তাই আগামী দিনেও আবার যে এমনটা ঘটবে না, তা নিয়েও নিশ্চিত হতে পারছি না।’’

বিধাননগর কমিশনারেটের এক বরিষ্ঠ আধিকারিক জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযোগে এক সন্দেহভাজনের কথা বলা রয়েছে। তার উপরে পুলিশ নজর রাখছে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘এর আগে দু’-একটি এই ধরনের সমস্যায় দেখা গিয়েছে, ঘটনার পিছনে পড়ুয়ারাই জড়িত। তাই এ ক্ষেত্রে ওই অভিযোগকারীর ছেলের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Crime Hacker Online Class
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy