আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ বৈঠকের পর কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে বহিষ্কৃত হলেন ১০ জন চিকিৎসক। ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে র্যাগিং-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে সম্মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ওই চিকিৎসকদের আজীবনের মতো হস্টেল থেকেও বহিষ্কার করা হবে। তাঁদের বাড়িতেও পাঠানো হবে অভিযোগপত্র।
আরজি করের প্ল্যাটিনাম জুবিলি ভবনে শনিবার দুপুর থেকেই শুরু হয় কাউন্সিলের বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার এবং ইন্টার্নদের প্রতিনিধিরাও। বাইরে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখান ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি ছিল, হাসপাতালে ‘হুমকি সংস্কৃতি’-তে অভিযুক্ত ৫৯ জনকে অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে। এর পরেই বৈঠকশেষে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল কাউন্সিল। জানানো হল, ১০ জন চিকিৎসককে আরজি কর থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার করা হবে। বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত চিকিৎসকেরা হলেন সৌরভ পাল, আশিস পান্ডে, অভিষেক সেন, আয়ুশ্রী থাপা, নির্জন বাগচী, সরিফ হাসান, নীলাগ্নি দেবনাথ, অমরেন্দ্র সিংহ, সৎপাল সিংহ এবং তনভীর আহমেদ কাজী। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের হস্টেল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযু্ক্তদের রেজিস্ট্রেশনের শংসাপত্র খতিয়ে দেখতে তাঁদের নামগুলি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছেও পাঠানো হবে।
সব অভিযুক্তের নামের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে আরজি করে হুমকি ও ভয়ের পরিবেশ তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও অভিযোগ, ওই চিকিৎসকদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পড়ুয়ারা কেউ তাঁদের কথা না মানলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। শুনতে হত হস্টেল থেকে বহিষ্কারের হুমকিও। রাত তিনটের সময় হস্টেলের ঘরে ডেকে চলত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এ ছাড়াও, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে বাধ্য করা হত ছাত্রদের। মিটিং-মিছিলে না এলে চলত হেনস্থা। হস্টেলেও নির্বিচারে চলত র্যাগিং। কখনও গভীর রাতে মদ আনতে পাঠানো হত অনুজদের। কমন রুমে সিনিয়রদের নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করে দেখাতে হত। রাজি না হলে চলত বাবা-মা তুলে কদর্য গালিগালাজ। এমন নানা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ৫৯ জনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযু্ক্তদের মধ্যে ৪৩ জনকে হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘিরে শুরু হয় আন্দোলন। সেই আবহেই রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চলার অভিযোগ উঠে আসে। এর পরেই কয়েক জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন আরজি কর হাসপাতালের পড়ুয়ারা। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫৯ জনকে চিহ্নিত করা হয়। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও রয়েছেন হাউসস্টাফ, ইন্টার্নেরা। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করে হাসপাতালের তদন্ত কমিটি। শেষমেশ শনিবারের বৈঠকের পর তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল কাউন্সিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy