আমেরিকা সফরে গিয়ে মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় তিন ঘণ্টার সেই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে রবিবার। সেখানেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রনেতা ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভলোদিমির জ়েলেনস্কিকে বার্তা দিয়েছেন মোদী। বলেছেন, এখন সংঘাতের সময় নয়। তা ছাড়া, যুদ্ধে জয়লাভ করা যে কোনও স্থায়ী সমাধান হতে পারে না, এমনটাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ফ্রিডম্যানের পডকাস্টে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়ে মোদী বলেন, ‘‘রাশিয়া এবং ইউক্রেন— উভয় দেশের সঙ্গেই আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সরাসরি বলব, এটা যুদ্ধের সময় নয়। সেই সঙ্গে, আমি প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিকেও বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে বলতে পারি যে, ভাই, পৃথিবীতে যত মানুষই আপনার পক্ষে থাকুন না কেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কখনও কোনও স্থায়ী সমাধান মিলতে পারে না। ইউক্রেন তাদের মিত্রদের সঙ্গে যতই আলোচনা করুক না কেন, তাতে কোনও ফল হবে না। আলোচনায় উভয় পক্ষকেই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’’
আরও পড়ুন:
রবিবারই ক্রেমলিনের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনায় বসেছে রাশিয়া এবং আমেরিকা। এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি-বার্তার মাঝেই রাশিয়ার কুর্স্ক শহরে ইউক্রেনের বাহিনীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিন। কিন্তু যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে পুতিনের নীতিতে অসন্তুষ্ট ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মস্কোকে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে কিভের বন্ধুস্থানীয় ইউরোপীয় দেশগুলি। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে অর্থপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ আলোচনার সুযোগ করে দিচ্ছে। এর জন্য দুর্ভোগও কম পোহাতে হয়নি।’’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেড্ডায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি এবং খনিজচুক্তি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। বৈঠকের পরেই ইউক্রেন জানিয়ে দেয়, তারা আমেরিকার দেওয়া ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানতে রাজি। রাশিয়ার সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসতেও রাজি হন জ়েলেনস্কি।