পরিত্যক্ত চামড়া কারখানার ভিতরের চৌবাচ্চা থেকে উদ্ধার হল চার বছরের এক শিশুর দেহ। সোমবার সকাল দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে তিলজলা রোড এলাকায়।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম অঙ্কিত দাস। সে দিন দশেক আগে বিহারের বৈশালী থেকে কলকাতায় তিলজলা রোডে তার দাদু-দিদার বাড়িতে বেড়াতে আসে। তার বাবা-মা বিহারেই রয়েছেন। তাঁদের খবর পাঠানো হয়েছে।
অঙ্কিতের দাদু শ্রীপূজন দাস বলেন, “রোজকার মতোই সকালে ঘরের সামনে ফাঁকা জায়গায় খেলছিল নাতি। আমি রান্নাঘরে ছিলাম আর ওর দিদা ঘরে কাজ করছিল। আচমকা শুনতে পাই, নাতি বাড়ির পাশে বন্ধ চামড়া কারখানার চৌবাচ্চায় পড়ে গিয়েছে। পাড়ার লোকেরাই ওকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ছুটে গিয়ে দেখি, সব শেষ।
পুলিশ জানায়, চৌবাচ্চা থেকে অঙ্কিতকে তুলে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান এক পড়শি। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়না-তদন্তের পরে সন্ধ্যা নাগাদ দেহটি তিলজলার হিন্দু কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
কিন্তু কী ভাবে অঙ্কিত বন্ধ চামড়া কারখানার চৌবাচ্চার কাছে পৌঁছল? তার পরিবারের সদস্যেরা জানান, পাড়ারই একটি ছেলে প্রথম অঙ্কিতকে চৌবাচ্চায় পড়ে থাকতে দেখে। সেই ছেলেটিরও খোঁজ করছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সকলের চোখ এড়িয়েই ছোট্ট অঙ্কিত কোনও ভাবে পরিত্যক্ত কারখানার চৌবাচ্চার কাছে গিয়েছিল। চৌবাচ্চাটিতে জল ছিল। আর তাতেই এই দুর্ঘটনা।
তিলজলা রোডের বাসিন্দাদের একাংশ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, তিলজলা, তপসিয়ার মতো এলাকায় এই রকম অজস্র মরণফাঁদ রয়েছে। এলাকার বেশ কিছু পরিত্যক্ত চামড়ার কারখানায় এই রকম বড় বড় জল-ভরা চৌবাচ্চা রয়েছে। সেগুলিতে চামড়া ভিজিয়ে রাখা হয়। চামড়ার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিকও মেশানো থাকে ওই সব চৌবাচ্চার জলে। স্থানীয় বাসিন্দা খালেক মোল্লা বলেন, “চৌবাচ্চাগুলির অধিকাংশেরই ঢাকনা নেই। ঠিক মতো পরিষ্কার হয় না। দিনের পর দিন উন্মুক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। ফলে সব সময়েই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকে যায়।”
রাজ্যের দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, “আমি বাইরে আছি। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, তা আমার কেন্দ্রের মধ্যে নয়। তবে তপসিয়া, তিলজলা এলাকার এই সমস্যা আমাদের নজরে রয়েছে। সরকারে আসার পরেই আমরা এই সমস্যা নিয়ে নানা পরিকল্পনা করেছি। তবে সেগুলি বাস্তবায়িত হতে সময় লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy