সাধারণ কাপড়ের নরম ব্যাগ। ভিতরে নীচের অংশ প্লাস্টিক দিয়ে মোড়া। বাইরে থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু সেই প্লাস্টিকের তলায় আলাদা করে তৈরি খোপ। সেখানে প্লাস্টিকের প্যাকেটে চিটে গুড়ের মতো পদার্থ।
এত লুকিয়ে নিয়েও শেষ রক্ষা হল না। বুধবার রাতে সেই লুকনো প্যাকেট সমেত ধরা পড়েছেন দুই নেপালি যুবক। চিটে গুড়ের মতো বস্তুটি আর কিছুই নয়, নেশার দ্রব্য চরস। কলকাতা থেকে বিমানে চেপে চিনের কুনমিং শহরে যাচ্ছিলেন তাঁরা। দু’জনের কাছ থেকে চার কিলোগ্রাম করে মোট আট কিলোগ্রাম চরস বাজেয়াপ্ত করেছে কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতর। শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, ভারতের বাজারে এর দাম কিলোগ্রাম প্রতি এক লক্ষ টাকা হলেও বিদেশের বাজারে তার দাম প্রায় দশ গুন। শুল্ক অফিসারদের আশঙ্কা, এই চরস চিন থেকে বিদেশের অন্যত্র পাচার হয়ে যেত।
সূর্যপ্রসাদ বুধা এবং বিরুদ বুধা নামে এই দুই নেপালি যুবক সম্পর্কে খুড়তুতো ভাই। সড়ক পথে তাঁরা নেপাল থেকে কলকাতায় আসেন। নেপাল থেকেই ওই চরস তাঁরা জোগাড় করেন। জেরার মুখে তাঁরা জানান, চিনে নির্দিষ্ট এক ব্যক্তির কাছে ওই চরস পৌঁছে দিলে তাঁরা ৫০ হাজার টাকা করে পেতেন। জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া এই চরস এতটাই খাঁটি যে তা থেকে অনেক বেশি পরিমাণ চরস তৈরি করা সম্ভব।
সন্দেহ হল কী করে?
শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, মাত্র ২০-২২ বছরের দুই নেপালি যুবক কলকাতা থেকে চিনের উড়ান ধরার সময়েই সন্দেহ হয় তাঁদের। যুক্তি, নেপাল থেকে সরাসরি চিনে উড়ে যেতে পারতেন তাঁরা। কেন কলকাতায় এলেন? ভারতে ঢোকার জন্য ভিসা না লাগলেও এখান থেকে নেপালিদের পক্ষে বিদেশ যাওয়ার অনেক নিয়মকানুন রয়েছে। প্রশ্ন ওঠে, এত সব ঝক্কি সামলে কেন তাঁরা চিন যাচ্ছেন? অভিবাসন দফতর পেরিয়ে যাওয়ার পরে শুল্ক দফতরের অফিসারেরা তাঁদের পথ আটকান। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ, তল্লাশি। সঙ্গের ব্যাগ ততক্ষণে তাঁরা পাঠিয়ে দিয়েছেন বিমানের ভিতরে। সেই ব্যাগ ফিরিয়ে আনা হয়। তার পরে সেই ব্যাগ খুলে লুকনো খোপ থেকে বেরিয়ে পড়ে চরস।
শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একসঙ্গে এতটা চরস সাম্প্রতিককালে বিমানবন্দরে ধরা পড়েনি। মাস পাঁচেক আগে কলকাতার খিদিরপুরের এক যুবক ধরা পড়েছিলেন চার কিলোগ্রাম চরস নিয়ে। তিনি যাচ্ছিলেন হংকং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy