পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই শহরে পানীয় জল সরবরাহের অপরিকল্পিত পাইপলাইন বসেছে এবং তা থেকে জলবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠছে। শুধু দক্ষিণ কলকাতা নয়, শহরের অনেক ওয়ার্ডেই বস্তি, কলোনি-সহ একাধিক স্থানে পুরসভার সরবরাহ করা জল নেওয়ার জন্য যে যার মতো পাইপলাইন বসিয়ে নিয়েছেন। এবং তা কোথাও নর্দমার পাশ দিয়ে, কোথাও বা শৌচাগারের পাশ দিয়ে গিয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই পুরসভার অনুমোদনের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ।
পুরসভার এক আমলা জানান, পুরসভার জল সরবরাহের পাইপ বাড়ির কাছ দিয়ে যাওয়াই নিয়ম। বাড়িতে তা নিয়ে যেতে হলে পুর লাইসেন্স প্রাপ্ত মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করাতে হবে। কিন্তু ওই সব জায়গায় তা হয়নি।
কী ভাবে এমনটা ঘটল? ওই আমলার অভিযোগ, ‘‘ভোটের তাগিদে জনপ্রতিনিধিরা অনেক সময়েই অনুমোদন দিয়ে দেন। আর স্থানীয় কাউন্সিলরের সমর্থন থাকলে পুর অফিসার বা ইঞ্জিনিয়ারদের বাধা দেওয়ার সাহসই থাকে না।’’ এ ভাবেই অনেক ওয়ার্ডে অবাধে যত্রতত্র জলের পাইপ বসে গিয়েছে। এখন আন্ত্রিকের প্রকোপ বাড়তে সেই বিষয়ে সতর্ক হতে চায় পুর প্রশাসন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে যাদবপুর, বাঘাযতীন, মুকুন্দপুর, পাটুলি সহ কয়েকটি এলাকার মানুষ পেটব্যথা, বমি এবং পায়খানার উপসর্গ নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভিড় করেন। শনিবার পর্যন্ত ভর্তির সংখ্যা প্রায় দু’শোর কাছাকাছি। আর পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ভিড় করার সংখ্যাটা ৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ বস্তি এবং কলোনির বাসিন্দা। বাঘাযতীন এলাকা থেকে দু’টি বোতলের জলেও এদিন কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া মিলেছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
শুক্রবার পর্যন্ত মেয়ের শোভন চট্টোপাধ্যায় বলে গিয়েছেন, পুরসভার জলের সঙ্গে কোথায় নোংরা জলের সংমিশ্রণ হচ্ছে তা ধরা যায়নি। এই প্রেক্ষিতেই শনিবার পুর বিশেষজ্ঞরা অপরিকল্পিত পাইপলাইনের বিষয়টা তুলে ধরেন। তাঁদের কথায়, শহর জুড়ে ওই অপরিকল্পিত পাইপলাইন যেখানে রয়েছে তা বদল করা জরুরি। না হলে বিপদের ঝুঁকি থেকেই যাবে।
এ দিকে গত কয়েক দিনে আন্ত্রিক কবলিত এলাকায় পরীক্ষা চালিয়ে পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের আধিকারিকেরা ১৮টি জায়গায় পাইপলাইনে ছিদ্র পেয়েছেন। দফতরের ডিজি বিভাস মাইতির অবশ্য দাবি, ওই সব ছিদ্রের বেশির ভাগ স্থানেই সংক্রমণের খবর নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy